চীনে পদ্মাসেতুর সর্বশেষ স্প্যানের কাজ শেষ, খুঁটিতে উঠবে ২৯তম
২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৮:১৫
ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে চীনে পদ্মাসেতুর স্প্যান তৈরি নিয়ে অনিশ্চিয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা কেটে গেছে। চীনে পদ্মাসেতুর সর্বশেষ দুটি স্প্যানের কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে স্প্যান দুটির মালামাল ও যন্ত্রাংশ বন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো এখন বাংলাদেশে পৌঁছার অপেক্ষায়। এদিকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বসবে পদ্মাসেতুর ২৯তম স্প্যান। ৪১টি স্প্যানের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে ২৮টি। ২৯তম স্প্যান বসানো হলে বাকি থাকবে আর মাত্র ১২টি।
রোববার (২৬ এপ্রিল) সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং জানায়, চীনের কারখানায় সব কাজ শেষে স্প্যান যন্ত্রাংশ শিনহোয়াংদাও বন্দরে পৌঁছেছে। শিনহোয়াংদাও পোর্টে লোড শেষে আগামী ১০ মে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেবে। এরপর জুন মাসের শুরুতে মোংলা বন্দরে পৌঁছবে সেগুলো।
এই স্প্যান দুটির কাজ শেষের মাধ্যমে করোনার কারণে পদ্মাসেতুর বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল তা কেটে গেল। গত জানুয়ারিতে চীনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে দুটি স্প্যানর নোড ও কর্ড তৈরি অসমাপ্ত থেকে যায়। এসব অনিশ্চয়তায় শেষে জাহাজে তুলে এখন বাংলাদেশের পথে রওনা দেওয়ার অপেক্ষায় পদ্মাসেতুর সর্বশেষ দুটি স্প্যান।
চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং সূত্রে জানা যায়, স্প্যানগুলোর নোড ও কর্ড চীনের শিনহোয়াংদাও এর সাংহাইগুয়ান স্টিল ফ্যাক্টরিতে তৈরি হয়। তারপর শিনহোয়াংদাও বন্দর থেকে জাহাজে তুলে মোংলা বন্দরে আনা হয়। চট্রগ্রাম বন্দরে নাব্যতা কম থাকায় সেখানে আনলোড করা সম্ভব হয় না।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সেতুর ২৯তম স্প্যান বসিয়ে দেওয়া হবে। মাওয়া স্প্যান ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডের ভেতর থেকে স্প্যানটি বের করে রাখা হয়েছে। শেষ হয়েছে পেইন্টিংয়ের কাজ।
সেতুর একজন প্রকৌশলী জানান, সেতুর একেকটি স্প্যান চার লেয়ারে পেইন্টিং করতে হয়। এখন হুক/রেলিং/বালান্স লোড ও লাড্যার ইন্সটল করার জন্য আরও সাতদিন সময় লাগবে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১৯ ও ২০ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হবে।
পদাসেতুর প্রকৌশলীরা আরও জানান, সেতুর মূল স্ট্রাকচার বা কাঠামো হচ্ছে এই ট্রাস (স্প্যান)। এটি প্রায় ১১৫টি নোড ও কর্ডের জায়ান্ট দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২৮টি স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে রয়েছে আরও ১১টি।
এদিকে পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত সেতুর ৮৮ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। এখন অবশিষ্ট স্প্যান বসানোর পাশাপাশি সেতুর ওপর সড়কপথ তৈরির কাজ চলছে। আগামী বছরের জুনে শেষ হবে সেতুর নির্মাণ কাজ।
তিনি জানান, সরকারি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একই দিন সেতুতে যানবাহন ও ট্রেন উঠিয়ে দেওয়া হবে। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা।