১ মে থেকে বন্ধ হচ্ছে কাপ্তাই লেকে মাছ ধরা
২৮ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৪৪
রাঙ্গামাটি: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সববৃহৎ কৃত্রিম জলাধার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেকে প্রতি বছরের মতো এবার পহেলা মে থেকে আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস হ্রদে আহরণ বন্ধ থাকবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ।
জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে পহেলা মে থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ থাকবে। এই তিনমাস হ্রদের ওপর জীবিকা নির্বাহ করা জেলেদের মাঝে সহায়তা দেওয়া হবে।
করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, “যতদিন পর্যন্ত করোনার এই স্থবিরতা কাটিয়ে উঠবে না ততদিন পর্যন্ত আমরা এই ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখবো। আমাদের ত্রাণ সহায়তা থেকে কাপ্তাই হ্রদের ওপর জীবিকানির্বাহ করা জেলেরাও বাদ নেই। আমি প্রতিটি ইউএনও’কে বলে দিয়েছি, হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধের পরবর্তীতে যতদিন পর্যন্ত জেলেদের মাঝে নির্ধারিত ভিজিএফ কার্ডের সহায়তা দেওয়া হবে না, ততদিন পর্যন্ত করোনার ত্রাণ তহবিল থেকে তাদের যেন সহায়তা দেওয়া হয়। জেলেদের মাঝে নির্ধারিত ভিজিএফ কার্ডের খাদ্যশস্য বরাদ্দের বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে জানিয়েছি।”
প্রসঙ্গত, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বদ্ধজলাশয়সমূহের মধ্যে সর্ববৃহৎও। কাপ্তাই হ্রদের আয়তন প্রায় ৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর। যা বাংলাদেশের পুকুরসমূহের মোট জলাশয়ের প্রায় ৩২ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ মোট জলাশয়ের প্রায় ১৯ শতাংশ। ১৯৬১ সালে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এ হ্রদের সৃষ্টি হলেও এটি রাঙ্গামাটিতে মৎস্য উৎপাদন ও স্থানীয় জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে আসছে।
অন্যদিকে, মৎস্য উৎপাদনের মধ্যদিয়ে রাজস্ব আদায়েও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এই হ্রদটি। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরাসহ হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছরের পহেলা মে থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পুরো রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলা মিলে সরকারি তালিকাভুক্ত প্রায় ২২ হাজার জেলে রয়েছেন।