সাংবাদিক হুমায়ুন কবির খোকন আর নেই
২৮ এপ্রিল ২০২০ ২৩:১০
ঢাকা: দৈনিক সময়ের আলোর নগর সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদক হুমায়ুন কবির খোকন মারা গেছেন। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার। তবে মৃত্যুর আগে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টার দিকে মৃত্যু হয় হুমায়ুন কবির খোকনের। দৈনিক সময়ের আলোর একাধিক প্রতিবেদক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার কায়েস সারাবাংলাকে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক হুমায়ুন কবির খোকনকে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
রিজেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে কায়েস জানান, হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রথমে তার জ্বর আসে। পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শেষে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান তিনি। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, জানতে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
রিজেন্ট হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ শাহেদ সারাবাংলাকে বলেন, সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি হন হুমায়ুন কবির খোকন। রাত পৌনে ১০টায় মারা গেছেন তিনি। তার মধ্যে করোনার কিছু উপসর্গ ছিল। সে কারণে পরীক্ষার জন্য সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর আগেই তার শরীর থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, নমুনা পরীক্ষার ফল আসার আগ পর্যন্ত আসলে বলা যাবে না তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না। তবে যেহেতু তার মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কিছু উপসর্গ ছিল, তাই করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে যে বিধি অনুসরণ করা হয়, তার ক্ষেত্রেও তাই করা হবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সহসভাপতি নজরুল কবির সারাবাংলাকে বলেন, খোকন হৃদরোগজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন আগে থেকেই। তার রিং (স্টেন্ট) পরানো ছিল। এর মধ্যে শুক্রবার থেকেই তার ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি জ্বর ছিল, কাশিও ছিল। আজ দুপুরের পর থেকেই তার একটু একটু করে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বিকেলে খোকন ও তার সহধর্মিনীর সঙ্গে আমার কথা হয়। কাল (বুধবার) সকালে তাদের করোনা নমুনা পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ল্যাবে যাওয়ার কথা।
নজরুল কবির আরও বলেন, বিকেলে খোকনের শারীরিক অবস্থা জানার পরই ডিআরইউ থেকেই একটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দেওয়া হয়। মহাখালী থেকে কাছাকাছি দুইটি হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি করাতে পারেনি বলে জেনেছি, তবে হাসপাতাল দুইটির নাম এখনো জানতে পারিনি। পরে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মতো বাজে। উপসর্গ ও লক্ষণ বিবেচনায় খোকনকে কোভিড-১৯ সাসপেক্টেড হিসেবে দ্রুত আইসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে এর মধ্যেই তার হার্ট অ্যাটাক হওয়ায় তাকে বাঁচানো যায়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
নজরুল কবির জানান, খোকন ও তার সহধর্মিনীর নমুনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। তার স্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী বাসাবো তালতলা কবরস্থানে আইইডিসিআর’র তত্ত্বাবধানে দাফন করা হবে খোকনকে।
হুমায়ুন কবির খোকন ছিল গণমাধ্যমের একটি পরিচিত মুখ। আজকের কাগজ, দৈনিক মাতৃভূমি, আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। সবশেষ দৈনিক সময়ের আলোতে কাজ করেন প্রধান প্রতিবেদক ও নগর সম্পাদক হিসেবে। সদা হাস্যোজ্জল ও বিনয়ী হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন তিনি।