Friday 11 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চলে গেলেন কিংবদন্তি অভিনেতা ইরফান খান


২৯ এপ্রিল ২০২০ ১২:৫১

অসুস্থতার কাছে হার মানলেন হলিউড-বলিউড মাতানো কিংবদন্তি অভিনেতা ইরফান খান। আজ বুধবার (২৯ এপ্রিল) ‍মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ৫৪ বছরেই থেমে গেল শক্তিমান এই অভিনেতার জীবন।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর, ২০১৮ সালে নিউরোএনডোক্রাইন টিউমার (এক ধরনের কোলন ক্যানসার) ধরা পড়ে ইরফান খানের। তখন থেকেই তিনি এ রোগের জন্য চিকিৎসা নিয়ে যাচ্ছেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল (মঙ্গলবার) মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধিরুভাই আম্বানি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে আর একটি দিনও তাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হলো না কোনো চিকিৎসাতেই।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত শনিবারেই মা সাঈদা বেগমকে হারিয়েছেন ইরফান। ৯৫ বছর বয়সে সাঈদা বেগম মারা যান জয়পুরে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন থাকায় তিনি মায়ের দাফনেও অংশ নিতে পারেননি।

ইরফান খানের মৃত্যুর খবর দিয়ে তার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে লিখেছেন—

২০১৮ সালে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই শুরুর কথা সবাইকে জানাতে ইরফান একটি নোট লিখেছিলেন। ওই নোটে তিনি লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমি আত্মসমর্পণ করেছি।’ তিনি ছিলেন স্বল্পভাষী। চোখের ভাষায় নিরব অভিব্যক্তি ফুটিয়ে ‍তুলতেন। রূপালি পর্দায় তার উপস্থিতি চিরস্মরণীয়। তার মৃত্যুর খবরটি এখন জানাতে হচ্ছে, এর চেয়ে হৃদয়বিদারক আর কিছুই হতে পারে না। ইরফান ছিলেন দৃঢ়চিত্তের একজন মানুষ, যিনি শেষ পর্যন্ত লড়ে যান এবং তার সংস্পর্শে আসা প্রতিটি মানুষতে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যান।

ইরফানের বিরল এক ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। কেবল ক্যানসার নয়, ওই সময় আরও শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। আজ তার ভালোবাসা, যাদের জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি ভাবতেন, সেই পরিবার ছেড়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে, রেখে গেছেন সত্যিকারের নিজস্বতা। আমাদের প্রার্থনা, তিনি শান্তিতে থাকবেন। তিনি নিজেই যে কথা বলে গেছেন, তার সঙ্গে সুর মিলিতে বলব, ‘যেন এই প্রথমবার জীবনকের স্বাদ পরখ করছি, জীবনের জাদুকর অধ্যায়।’

বিজ্ঞাপন

একনজরে ইরফান খান

জন্ম ১৯৬৭ সালের ৭ জানুয়ারি। ১৯৮৪ সালে নয়া দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে (এনএসডি) স্কলারশিপ পান ইরফান অর্জন করেন, যদিও তিনি তখন স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত। পরে সেখান থেকেও অভিনয় শেখেন। ১৮৮৮ সালে মীরা নায়ারের ‘সালাম বোম্বে’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে অভিষেক ইরফানের। এরপর অবশ্য অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়েছে বলিউডে জায়গা পাকাপোক্ত করে নিতে।

সিনেমায় সুযোগ না পাওয়ার কারণে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন ইরফান খান। দূরদর্শনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ধারাবাহিকগুলোতে কাজ করে যেতে থাকেন। পরে ২০০৩ সালে ‘হাসি’ ও পরের বছরই ‘মকবুল’ ছবিতে ইরফানের অভিনয় বলিউডকে বাধ্য করে তার দিকে ঘুরে তাকাতে। পরে ভারতের অন্যান্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করেছেন। বলিউডেই ‘নেমসেক’, ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’, ‘পান সিং তোমার’, ‘লাঞ্চবক্স’, ‘পিকু’, ‘তলভার’, ‘হিন্দি মিডিয়াম’, ‘আংরেজি মিডিয়ামে’র মতো দর্শকপ্রিয় ছবি উপহার দেন তিনি। পেয়েছেন প্রায় সব পুরস্কারই।

নিজ যোগ্যতায় হলিউডও মাতিয়েছেন ইরফান। তার অভিনীত ‘স্লামডগ মিলিয়নার’, ‘দ্য অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান’, ‘লাইফ অব পাই’, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’, ‘ইনফার্নো’র মতো ছবিগুলো যেমন ছিল ব্যবসা সফল, তেমনি অভিনয়ের মুন্সিয়ানাতেও সবাইকে মাত করেছেন। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকির ‘ডুব’ সিনেমাতেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন এই শক্তিমান অভিনেতা।

ইফরান খান ইরখান খানের মৃত্যু কোলন ক্যানসার টপ নিউজ ডুব লাইফ অব পাই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর