Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি আদেশ অমান্য করে বিমা কোম্পানির অফিস চালু, ঝুঁকিতে কর্মীরা


৩০ এপ্রিল ২০২০ ০৯:২৭

ঢাকা: সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যেও অফিস কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে অনেকগুলো বিমা কোম্পানি। বেশ কয়েকটি বিমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা মিলেছে। আর এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য হলো, সরকারের সাধারণ ছুটির মধ্যেও গ্রাহকদের সুবিধার জন্য স্বল্প সময়ের জন্য অফিস খোলা রাখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আইনের কোনো ব্যতয় হচ্ছে না। কারণ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে, জরুরি প্রয়োজনে অফিস খোলা রাখার কথা বলা আছে।’

বিজ্ঞাপন

সূত্রমতে, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জীবন বিমা করপোরেশন, সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং দুটি বিদেশি বিমা কোম্পানিসহ দেশে মোট বিমা কোম্পানির সংখ্যা ৭৮টি। এর মধ্যে ৩২টি জীবন বিমা, ৪৬টি সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে। বর্তমানে বেশির ভাগ বিমা কোম্পানি সরকারের সাধারণ ছুটির মধ্যে স্বল্প পরিসরে অফিস চালু করছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো পলিসিহোল্ডাদের কাজ থেকে পলিসির প্রিমিয়াম জমা দিচ্ছেন। আবার কোন কোন কোম্পানি গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ, মাঠ কর্মীদের কমিশন প্রদান এবং গ্রাহকের এসবি (সারভাইভাল বেনিফিট) পরিশোধ করার অজুহাতে এইসব বিমা কোম্পানি চালু রাখছে।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সদস্য বোরহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোন বিমা কোম্পানি স্বল্প সময়ের জন্য অফিস চালু রাখতে চাইলে কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই আইডিআরএ‘র অনুমতি নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে তা আইনের লঙ্ঘন হিসাবে ধরা হবে।

তিনি বলেন, বিমা কোম্পানিগুলোকে স্বল্প পরিসরে অফিস খুলতে হলেও আইডিঅরএর কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদনে উল্লেখ করতে হবে ‘সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা স্বল্প পরিসরে বিমা কোম্পানি চালু রাখতে চাই।’ এইক্ষেত্রে তারা আইডিঅরএ‘র কাছে অনলাইনেও আবেদন করতে পারবে। তবে এখন পর্যন্ত কোন বিমা কোম্পানি স্বল্প পরিসরেতাদের অফিস চালু রাখার জন্য আবেদন করেছে বলে আমার জানা নেই। আর অনুমতি ছাড়া কোন বিমা অফিস চালু রাখলে সরকারের আদেশ অমান্য করা হয়েছে বলে বিবেচনা করা হবে।

অন্যদিকে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদীবা রহমান লকডাউনের সময় স্বল্প পরিসরে তাদের কোম্পানি খোলার রাখার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, সরকারের সাধারণ ছুটির মধ্যে আমরা অনলাইনে কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করছি। পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে অফিসও চালু করেছি। বিশেষ করে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ এবং পলিসিহোল্ডাদের বিভিন্ন সেবা দেওয়ার জন্য অফিস কিছু সময় খোলা রাখতে হচ্ছে। কারণ অনেক গ্রাহক তাদের প্রিমিয়াম জমা দিতে আসেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতি সপ্তাহে কমিশন এবং ক্লেইম দেওয়ার জন্য অলটারনেট উপায় হিসেবে কিছু সময়ের জন্য অফিস খোলা রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে যেসব স্টাফ ক্যাশ কাউন্টারে বসে কাজ করছেন তারা পিপিই পড়েই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি বলেন, যতদিন সরকার পুরোপুরি ছুটি প্রত্যাহার না করবে, ততদিন আমাদের এইভাবে কাজ করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কোনো স্টাফ করোনাবাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। তবে আমাদের এক কর্মকর্তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

অন্যদিকে, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এস এম নূরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ হতে জনসাধারণকে রক্ষাকল্পে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে পর্যায়ক্রমে আগামী ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ মানুষ ঘোষণা করেছে। ছুটিকালীন সময়ে আমাদের অনলাইন সেবা চালু রয়েছে। সম্মানিত গ্রাহকগণ তাদের মূল্যবান পলিসির প্রিমিয়াম ঘরে বসেই বিকাশ, রকেট অথবা যেকোনো ব্যাংকের ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ড-এর মাধ্যমে জমা করতে পারছেন।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়ন কর্মকর্তাদের কমিশন প্রদান করেছি, গ্রাহকের এসবি (সারভাইভাল বেনিফিট) প্রদান করছি। এছাড়া আমাদের অ্যাপস ও ওয়েবসাইট ব্যবহার করে গ্রাহক তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সহজেই পেয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আর বলেন, এইসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সপ্তাহে দুএকদিন স্বল্প পরিসরে জেনিথ ইসলামি লাইফের কোনো কোনো শাখা খোলা হচ্ছে। আর এটা করা হচ্ছে সরকারের আদেশ মোতাবেক। কারণ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা আছে জরুরি প্রয়োজনে স্বল্প পরিসরে অফিস খোলা রাখা যাবে।

অমান্য ঝুঁকি বিমা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর