১০ মাসে সরকারের ব্যাংক ঋণ ৫৮ হাজার কোটি টাকা
৩ মে ২০২০ ১৬:৪৫
ঢাকা: বাজেটের ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরে প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-১৯ থেকে এপ্রিল-২০) সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৫৭ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। এটি নির্ধারিত পুরো অর্থবছরের চেয়ে ২২ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ১০ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি জানিয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এই ঘাটতি মোকাবিলায় বৈদেশিক উৎস থেকে ৬৮ হাজার ১৬ কোটি টাকা এবংঅভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা এবং ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। এছাড়া ২৭ হাজার কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে এবং অনান্য উৎস থেকে আরও ৩ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কিন্তু গত মার্চ এপ্রিল থেকে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব এবং বছরজুড়ে অভ্যান্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কমে যায়। আর এই কারণে ঘাটতি বাজেট মোকাবিলায় সরকার ব্যাংক ঋণনির্ভর হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ঘাটতি বাজেট মোকাবিলায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষামাত্রা থাকলেও এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৫৭ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। এতে ব্যাংকিং খাত থেকে নেওয়া সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৬৬ হাজার ২৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের এখনো আরও দুই মাস বাকি। ফলে আগামী দুই মাসে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সরকারের এক দিকে রাজস্ব আয় কমে গেছে। বিপরীতে সরকারের ব্যয় বেড়ে গেছে। সরকারের নিয়মিত ব্যয়ের পাশাপাশি ত্রাণসহ বিভিন্ন প্রণোদনা খাতে সরকার প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে এক ধরনের স্থবিরতার নেমে এসেছে। ফলে রাজস্ব আদায় কমে গেচে। অনেকক্ষেত্রে আমদানি পণ্যে শুল্ক ছাড় দিতে হয়েছে। এসব কারণে সরকারের ব্যাংক ঋণ-নির্ভরতা বেড়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে চূড়ান্ত আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। এতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আয় ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১১ শতাংশ। এনবিআর বর্হিভূত রাজস্ব আয় ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। আর কর বর্হিভূত রাজস্ব আয় ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১ দশমিক ৩ শতাংশ।