Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা


৩ মে ২০২০ ১৭:৫৮

ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে একমাসেরও বেশি সময় ধরে দেশে চলছে সাধারণ ছুটি। বেশিরভাগ অফিস-আদালত এই সময়ে রয়েছে বন্ধ। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সাধারণ ছুটি আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানোর চিন্তাও চলছে। তবে এই প্রায় অবরুদ্ধ অবস্থাতেও প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন দফতরে কাজ করে যেতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, ঝুঁকি থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা কাজ করছেন।

বিজ্ঞাপন

সচিবালয়ের সবগুলো মন্ত্রণালয় না খুললেও রোববার (৩ মে) জরুরি প্রয়োজন থাকা দফতরগুলো এবং সচিবালয়ের বাইরে থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের একাধিক দফতর খুলেছে। সরকারি এসব মন্ত্রণালয় বা দফতরে কাজ করা একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। অনেকেই এই সময়ে মন্ত্রণালয়ে কাজ করতে এসে নির্দিষ্ট নিয়ম মানছেন না, যা অন্যদের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই মহাপরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, এই সময়ে তাদের বিভাগে তেমন কোনো কাজ নেই। যতটুকু আছে, সেটি বাসায় বসেই অনলাইনে করা সম্ভব। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে অফিস করতে হচ্ছে।

এই মন্ত্রণালয়ের পরিচালক পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন গাদাগাদি করে মাইক্রোবাসে চড়ে অফিস করতে হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমিউনিটি পর্যায়ে থাকলেও অফিসে যাতায়াতের এই পদ্ধতি স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

অন্যদিকে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিনই সীমিত জনবল নিয়ে কাজ করছে। এসব কার্যালয়ের যেসব বিভাগের কাজ থাকে, কেবল সংশ্লিষ্ট ওই বিভাগের কর্মকর্তারাই আসছেন অফিসে।

এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, দুর্যোগকালীন সহায়তা দিতে আমরা কাজ করছি। ফলে প্রতিদিনই আমাদের সচিবালয়ে আসতে হচ্ছে। তারপরও প্রয়োজনের বাইরে কেউ অফিস করছেন না। যারা অফিস করতে আসছেন, তাদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করছেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, তাদেরও প্রতিদিন অফিস খোলা থাকছে। তবে সচিবালয়েরর আশপাশে যাদের বসবাস, তারা নিয়মিত আসছেন। যারা দূরে থাকেন, তাদের যাতায়াতের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সীমিত আকারে যেসব মন্ত্রণালয় খোলা রেখেছে, সেসব মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। নিজস্ব গাড়ি না থাকায় অন্যদের সঙ্গে, অর্থাৎ যাদের গাড়ি আছে তাদের সঙ্গে শেয়ার করে অফিসে যেতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ ছুটি চললেও তারা তা কাটাতে পারছেন না। অন্যান্য সময়ের মতো অফিস করতে হচ্ছে। সমস্যা হয় যাতায়াতে। মাঝে মধ্যে এক গাড়িতে অনেকজনকে একসঙ্গে যাতায়াত করতে হয়।

জানা যায়, এই সংকটকালে তথ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা রোটেশন করে ডিউটি করছেন। সে অনুযায়ী তাদের জন্য চারটি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও নিজ নিজ কর্মকর্তাদের-কর্মচারীদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেছে। আবার যারা কর্মক্ষেত্রের আশপাশে থাকেন, তারা নিজ দায়িত্বে চলে যান সচিবালয়ে।

এর আগে ২৩ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করে ২৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়িয়েছিল সরকার। ওই সময় সংশ্লিষ্ট ১৮টি মন্ত্রণালয় এই ছুটির বাইরে রাখলেও পরে প্রজ্ঞাপন সংশোধন করা হয়। তাতে বলা হয়, সব মন্ত্রণালয়ই সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

সচিবালয় সরকারি দফতর সাধারণ ছুটি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর