Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকলেও প্রণোদনায় নেই কাস্টমস কর্মীরা


৩ মে ২০২০ ২২:৫৩

ঢাকা: করোনায় স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। এর মধ্যে পণ্যসামগ্রী আমদানি ও রফতানিতে সহায়তা করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে করোনায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। তবে সরকার করোনায় সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা ঘোষণা করলেও এই কাতারে নাম নেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের। এ কারণে তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করছেন তারাই আবার প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি কাস্টমস কর্মকর্তাদের নেই কোন ঝুঁকি ভাতাও। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও তারা মূল্যায়ন পাচ্ছেন না, যা তাদের জন্য কষ্টদায়ক।

রোববার (৩ মে) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ঢাকা কাস্টমস হাউসে সরেজমিনে দেখা যায়, কাস্টমস কর্মকর্তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। একদিকে কাস্টমস কর্মকর্তারা যেমন শাহজালালে যাত্রী সেবা দিচ্ছেন দিন-রাত। তেমনি আবার বর্হিবিশ্ব থেকে আসা আমদানি পণ্য দ্রুত খালাস এবং দেশ থেকে পণ্য রফতানিতেও কাজ করছেন।

কাস্টমস কর্মকর্তারা কতটা ঝুঁকিতে রয়েছেন সেটা দেখতে যাওয়া হয় ঢাকা কাস্টমস হাউসের শুল্কায়ন হল রুম, ফ্রেইট ও কুরিয়ার শাখায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কর্মকর্তাদের নেই জীবন সুরক্ষাসামগ্রী। হাতে কোনোরকম গ্লাভস এবং মাস্ক পরেই গায়ে গা লাগিয়ে তাদের কাজ করছেন। প্রতিদিন না হলেও ঢাকা কাস্টমস হাউসে হাজারের অধিক জনসমাগম হয়ে থাকে। বিপুল পরিমাণ এই জনসমাগম কোনভাবেই রোধ করা সম্ভব নয়। কারণ এখানে যারা আসেন প্রত্যেকেই কোন না কোন আমদানি রফতানির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ফলে তাদের কাস্টমস হাউসে আসতেই হবে।

কাস্টম কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি-রফতানি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংশ্লিষ্টরা সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা শারীরিক দূরত্বও মানছেন না। সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করছেন না অনেকেই। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কাস্টম হাউসেও পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী নেই। ফলে তাদের মধ্যে শঙ্কা এবং উদ্বেগ কাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার (প্রিভেনটিভ) মো. সোলাইমান হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ২৫ মার্চ থেকে সরকারি ছুটি ঘোষণার পর সীমিত আকারে চালু ছিল কাস্টম হাউস। গত সপ্তাহ থেকে কাস্টম হাউস পুরোপুরি চালু হয়েছে। কাস্টমস হাউসে যারা আসেন তারা শারীরিক দূরত্ব মানছেন না। কর্মকর্তারা ভয় নিয়ে পণ্যখালাস করছেন। আবার শাহজালালে যাত্রী সেবা দিচ্ছেন।’

এছাড়া ঢাকা কাস্টমস হাউস বছরে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করে থাকে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জাতির ক্রান্তিকালে আমরা আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সার্বভৌমত্বরক্ষা ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আমরা সর্বক্ষণ কাজ করে যাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা দিলেও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। সরকার গার্মেন্টস, শ্রমিক, ব্যাংকার, ট্যুরিজমসহ বিভিন্ন সেক্টরে ঝুঁকি প্রণোদনা দিলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা নেই প্রণোদনার আওতায়। করোনার কারণে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরপরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে সরকারের রাজস্ব আদায়ে কাস্টমস হাউসগুলো সীমিত পরিসরে খোলা ছিলো। গত সপ্তাহ থেকে যা সম্পূর্ণভাবে খোলা রয়েছে।

করোনাভাইরাস কাস্টম কর্মকর্তা কাস্টম হাউজ প্রণোদনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর