ছুটি ১৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
৪ মে ২০২০ ১১:২৭
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এরইমধ্যে আমরা ৫ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছি। সেটিকে আমরা ১৫ মে পর্যন্ত বাড়াতে চাচ্ছি। নিজেকে সুরক্ষিত করতে হবে পাশাপাশি অপরকে সুরক্ষিত করতে এ সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার (৪ মে) গণভবন থেকে রংপুর বিভাগের জেলা সমূহের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশটাকে সুরক্ষিত করা, দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আর এই ভাইরাসের কারণে আমাদের দেশের মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া। এটাই হচ্ছে, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।’
‘যেহেতু এটি অত্যন্ত সংক্রামক একটি রোগ সে জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু রোজার মাস। আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। ধীরে ধীরে আমরা কিছু জিনিস উন্মুক্ত করে দিচ্ছি। কিন্তু সেখানে আপনাদের সবাইকে নিজেকে সুরক্ষিত করতে হবে। আবার অপরপকেও সুরক্ষিত রাখতে হবে।’
‘কাজেই আমাদের স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে যে সমস্ত নির্দেশনা গেছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা করার জন্য সেগুলো আপনারা অবশ্যই মেনে চলবেন। সেগুলো আপনারা অবশ্যই মেনে চলবেন।’
সবাইকে মাস্ক পরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এটা এমন না, করোনা রোগীকে চিকিৎসা দেবার জন্য যে মাস্ক পরতে হবে সেটা কিন্তু না, এটা আপনি মোটামুটিভাবে হাঁচি-কাশি থেকে আপনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে বা অন্যের হাঁচি কাশি থেকে নিজেকে বাঁচানো বা সংস্পর্শ থেকে বাঁচানোর জন্য এমনিক আপনি ঘরে থেকেও মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এটি ব্যবহার একান্তভাবে জরুরি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু যেহেতু একটু থমকে গিয়েছিল। এরইমধ্যে আমরা ছুটি ঘোষণা দিয়েছি ৫ই মে পর্যন্ত ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটাকে আমরা ১৫ই মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চাচ্ছি। কিন্তু সবকিছু যেহেতু রমজান মাস। এ রমজানে মাসে যাতে কেনাবেচা চলতে পারে। তার জন্য দোকান-পাঠ খোলা বা যেহেতু রোজার সময়, ঈদের কেনা বা সেহরি খাওয়া বা রোজার মাসে বাজারহাট করা, সেগুলো যাতে চলতে পারে, সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে সেগুলোর খোলারও মানে চালু রাখারও নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি। আর প্রতিটি জেলায় জেলাভিত্তিক যে সমস্ত ছোটখাট ক্ষুদ্র শিল্প রয়ে গেছে সেগুলো তারা চালাতে পারবেন, সেইভাবে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।’
‘আমাদের অর্থনীতির চাকাটা যাতে গতিশীল থাকে, সেখানে মানুষকে সুরক্ষিত রেখে, মানুষের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে সেগুলো যেন পরিচালিত হতে পারে তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে বেশ কতকগুলো নির্দেশনা আপনারা খুব শিগগিরই পাবেন। এটা আমাদের কেবিনেট ডিভিশন থেকে সেটা ঘোষণা দেওয়া হবে। আমরা চাচ্ছি, আমাদের যেমন সরকারি অফিস আদালত সব সীমিত আকারে আমরা চালু করে দিচ্ছি। যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। এবং সামনে ঈদ। ঈদের আগে কেনাকাটা বা যার যা দরকার সেগুলো যেন মানুষ করতে পারে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কিন্তু এখানে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, খুব বেশি খোলামেলা সবার সঙ্গে মেশা বা এক জায়গায় জড়ো হওয়া, বা খুব বড় জনসমাগম করা এই জায়গা থেকে সবাইকে মুক্ত থাকতে হবে। কারণ সেখানে কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেছে।’
সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। প্রথম দফায় ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে আরও ৪ দফা বাড়িয়ে ছুটির মেয়াদ ৫ মে পর্যন্ত করা হয়।
এই সাধারণ ছুটির মধ্যেই সরকার পোশাক কারখানাসহ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দফতর সীমিত আকারে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া সরকারের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সীমিত আকারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে রেকর্ড সংখ্যক নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড ১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। একদিনে শনাক্ত হয়েছেন ৬৬৫ জন নতুন রোগী। একইসময়ে মারা গেছেন আরও দুইজন।
এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৪৫৫ জন। আর আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৭৭ জনের।