Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার’


৪ মে ২০২০ ১৮:১০

ঢাকা: মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে সরকার ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (৫ মে) রাজধানীতে দুঃস্থ ও কর্মহীন মানুষের মধ্যে রমজান উপলক্ষে উপহার সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এই অভিযোগ করেন।

উত্তরার দক্ষিণখানে প্রেমবাগান কেসি স্কুলের কাছে আবদুল জব্বারের বাসার আঙিনায় বিমানবন্দর থানা বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে রমজান উপলক্ষে দুঃস্থ ও দরিদ্রদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণের এই অনুষ্ঠান হয়। মির্জা ফখরুল পিপিই পরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে দুঃস্থদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার করোনা সংকট মোকাবিলায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা একেক সময় একেকটা তুঘলকি সিদ্ধান্ত নেয়। কিছুদিন আগে সিদ্ধান্ত নিলো যে, অফিস-আদালত, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকবে। কিন্তু গণ-পরিবহন খোলা রাখলো। ফলে ঢাকার মানুষ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লো। এই বিষয়গুলোই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

‘এখন আবার গার্মেন্টস খুলেছে। কিন্তু গার্মেন্টস কর্মীদের যে নিরাপত্তা, সেটি নেই। গার্মেন্টস কর্মীদের অনেকেই আক্রান্ত হতে করেছে। অর্থাৎ সরকার ব্যর্থ হয়েছে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে বার বার বলেছি যে, আপনারা সবাই নিয়ে এক সাথে আলোচনা করে, পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। তারা সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন না এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, এক্সপার্টসদের সাথে পরামর্শ করে কাজ করছে না। এই দুঃসময়ে আমি কোনো সমালোচনা করতে চাই না। শুধু যে ক্রটিগুলো, যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো আমরা দেখিয়ে দিচ্ছি। আমরা মনে করি যে, এই ত্রুটিগুলো দেখে মানুষকে এক করে, সবাইকে একত্রিত করে, ঐক্যবদ্ধ করে সকল মানুষকে নিয়ে এই দুযোর্গ মোকাবিলা করবে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করছে, লড়াই করছে এই অসুখ থেকে বাঁচার জন্য। মানুষ আশা করে যে দুযোর্গের দিনে, দুঃসময়ের দিনে সরকার সঠিক পথ দেখাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার সঠিক পথ দেখাতে পারেনি। এই সরকার যেহেতু জনগণের জন্য নির্বাচিত নয়, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, জনগণের কাছে তাদের কোনো রকমের কোনো জবাবদিহিতা নাই। সেই কারণে মার্চ পর্যন্ত তারা এটাকে অবহেলা করেছে, এটাকে তারা গুরুত্বই দেয়নি।’

‘দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যখন লকডাউন ঘোষণা করেছে তখন এরা কিন্তু লকডাউন ঘোষণা করেনি, স্থানীয়ভাবে লকডাউন দিচ্ছে কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয়ভাবে কোনো লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। যার ফলে মানুষ এটার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেনি’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি মানুষের এই দুঃসময়ে যেভাবে ত্রাণ পৌঁছানোর কথা সেভাবে কাজটা সরকার করতে পারেনি বলেই এতো অভাব দেখা দিয়েছে। আমরা এপ্রিলের ৪ তারিখে সরকারকে একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম যে, সাধারণ মানুষ কাজ করতে পারবে না, তাদেরকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হোক। অন্তত তিন মাস এই টাকা দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। এগুলো স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে তালিকা করে সেনা বাহিনীর মাধ্যমে বিতরণ করা ‍যেতে পারে। এখন পর্যন্ত সরকার এটা কেয়ারই করেনি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হাসপাতালের যে ব্যবস্থা সেই ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না, একেবারেই অপ্রতুল ব্যবস্থা। ডাক্তাররা আক্রান্ত হচ্ছেন, সাংবাদিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন, পুলিশ আক্রান্ত হচ্ছেন। সাংবাদিক বলেন, ডাক্তার বলেন, নার্স বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বলেন কেউই বাদ পড়ছে না। সরকার সেই দিকে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। বরং যেসব সিদ্ধান্ত তারা নিচ্ছে সেগুলোর প্রতিটিতে সমন্বয়হীনতা রয়েছে।

বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বিএনপি অত্যন্ত দুঃসময় অতিক্রম করছে। এই দুঃসময়েও আমরা প্রতিটি জায়গায় সাধ্যমতো যতটুকু আমাদের সম্পদ আছে তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। আমরা প্রথম দিকে মানুষকে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিলি করেছি, মাস্ক বিতরণ করেছি। এর পরে আমরা উপহার নিয়ে এই রোজা মাসে চেষ্টা করছি সমগ্র দেশেই যতটুকু সম্ভব মানুষের কাছে দাঁড়ানোর জন্য।’

‘আমি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যারা বিত্তশালী ব্যক্তি আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ জানাব, আপনারা সবাই এগিয়ে আসুন। এভাবে যেন আমরা আমাদের ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়াতে পার ‘— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গুলশানের নিজের বাসায় কোয়ারেনটাইনে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী অসুস্থ। তিনি বাসাতেই আছেন। বেরোতে পারছেন না। তাকেও কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে। তিনি আপনাদের জন্য দোয়া করেছেন।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন একাদশ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মহানগর উত্তর যুব দলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, বিমান বন্দর থানা বিএনপির জুলহাস মোল্লা, মুনির ভুঁইয়া, স্থানীয় যুব দলের দেলোয়ার হোসেন সবুজ, আলমগীর হোসেন, স্থানীয় কমিশনার আলী আকবর, কৃষক দলের শহীদুল ইসলাম ভুঁইয়া ও বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।

করোনাভাইরাস টপ নিউজ মির্জা ফখরুল সরকার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর