ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করাতেই খুন হয় স্কুলছাত্র রানা, গ্রেফতার ৭
৪ মে ২০২০ ২১:২১
ঠাকুরগাঁও: জেলার সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করাতেই স্কুলছাত্র রাসেল রানাকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিবেশি কয়েকজন যুবক। এ ঘটনায় পুলিশ জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।
রোববার (৩ মে) বিকালে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম অন্যরা।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য ভোপলা গ্রামের হেলাল ইসলাম ওরফে নাপিত (২২), পশ্চিম ভোপলা গ্রামের নাঈম ইসলাম নাসির (১৯), বোচাপুকুর ডাক্তারপাড়া গ্রামের কুদ্দুস আলী সুন্দর (১৭), রতন ইসলাম (১৭), সোহেল ইসলাম (২২), উত্তর বোচাপুকুর গ্রামের আল আমিন ইসলাম শাহিন (২০) ও বোচাপুকুর বিশুরদিঘী গ্রামের সামিউল ইসলাম (২৬)।
পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেফতারকৃত যুবকরা ওই ইউনিয়নের পশ্চিম ভোপলা গ্রামের এক কিশোরীকে প্রায় সময় উত্যক্ত করত। এর প্রতিবাদ করে কিশোরীর ছোট ভাই ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্র রাসেল রানা (১৫)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ওই স্কুল ছাত্রকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
পরে ইভটিজিংয়ের বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার নামে গত ২৪ এপ্রিল ওই গ্যাংয়ের সদস্যরা কৌশলে স্কুলছাত্র রাসেলকে তার বাড়ির পাশের ঈদগাহ মাঠে নিয়ে যায়। এসময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে তারা। একপর্যায়ে গ্যাংয়ের সদস্যরা ওই স্কুলছাত্রের গলা কেটে হত্যা করে। এরপর নিহত স্কুলছাত্রের লাশ পাশের ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়।
পরদিন ২৫ এপ্রিল খবর পেয়ে সকালের দিকে স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের ধান ক্ষেত থেকে গলাকাটা অবস্থায় স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই নিহত স্কুলছাত্রের বড়ভাই রাজু আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলা দায়েরর পর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চন্দন কুমার ঘোষসহ অন্যরা মিলে দিনরাত পরিশ্রম করে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল গ্রেফতারকৃত ৭ জনের মধ্যে ৩ জন হেলাল ইসলাম, নাঈম ইসলাম ও কুদ্দুস আলীকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালতের বিচারক আরিফুল ইসলাম ওই ৩ জনের কাছ থেকে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি নেন। আদালতে তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন।’ এরপর আদালতের বিচারক তাদের ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।