চট্টগ্রামে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা, মূর্তি ভাঙচুর
৪ মে ২০২০ ২৩:১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় একটি বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুর্বৃত্তরা ওই মন্দিরে হামলা চালিয়ে বৌদ্ধ মূর্তি এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে।
রোববার (৩ মে) ভোরে উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের বিবিরবিলা শান্তিবিহারে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকের হোসাইন।
শান্তিবিহারের অধ্যক্ষ ধর্মতিলক ভিক্ষু সারাবাংলাকে জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে বিহারের একটি কক্ষে তিনি ও আরেকটি কক্ষে তার দুই শিষ্য ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিহারের পাশে রাস্তায় তিনি হইচইয়ের শব্দ পান। বিহারের ছাদে গিয়ে দেখতে পান, সেলিমের দোকানে সালিশ বৈঠক চলছে। সেখানে আশপাশের এলাকার শখানেক বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে দেখেন। একটি পুলিশের গাড়িও তিনি সেখানে দেখেন। তাদের কথাবার্তায় বুঝতে পারেন, এলাকার যুবক রকি বড়ুয়ার সঙ্গে মাছের ব্যবসা নিয়ে বিরোধের মীমাংসা হচ্ছে। সেখানে কয়েক দফা ঝগড়াও হয়। তাদের সবার হাতে লাঠিসোঠা ও ধারালো অস্ত্র ছিল। সেখানে বেলাল স্টোর নামে একটি দোকানের ভেতর থেকে তারা বিহারের ছাদে ভিক্ষুকে দেখতে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।
ধর্মতিলক ভিক্ষু বলেন, ‘সম্ভবত তারা ভেবেছিলেন, আমি রকি বড়ুয়ার পক্ষ নিয়ে ওই ঘটনার ভিডিও করছি। আমি ভয় পেয়ে নিচে নেমে আমার রুমে ঢুকে শুয়ে পড়ি। রাত ৩টার দিকে সেখান থেকে লোকজন মিছিল করে চলে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারি। মিছিল থেকে পুলিশ ও বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়। আধাঘণ্টা পর হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণের মতো আওয়াজ ও হট্টগোল শুনতে পাই। ৪০ থেকে ৫০ জন যুবক বিহারে ঢুকে মূর্তি ভাঙচুর করে। আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করে। বিহারের জানালা ও সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করে। আমার রুমের দরজায় কয়েকবার লাথি দেয়। কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শুনি। আমি রুমের ভেতরে আলনার পেছনে গিয়ে লুকিয়ে থাকি। সকাল প্রায় সোয়া ৭টা পর্যন্ত তারা বিহারে তাণ্ডব চালায়। ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। পুলিশও আসেনি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কয়েকজন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, রকি বড়ুয়ার সঙ্গে বিরোধের জেরে হামলা হয়েছে। উভয়পক্ষ সরকারি দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানার ওসি জাকের হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘শান্তিবিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়সেন বড়ুয়া বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমরা এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি। হামলার নেপথ্যে কী ঘটনা ছিল, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এখনো সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলার মতো তথ্য আমরা পাইনি।’