Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এএসআই বলছে আত্মহত্যা, পরিবারের দাবি খুন


৫ মে ২০২০ ১১:৪৯

ঢাকা: রাজধানীর আদাবর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলাম রবিনের দাবি, তার স্ত্রী আফরিন সুলতানা মুন্নী (২৭) পারিবারিক কলহের জেরে গলায় দড়ি দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আর মুন্নীর চাচা মুজিবরের দাবি, মুন্নীকে হত্যার পর মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।

সোমবার (৪ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মৃত মুন্নীর ছোট চাচা মুজিবর রহমান মোবাইলে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদাবর থানার এএসআই নজরুল ইসলাম রবিনের সঙ্গে আফরিন সুলতানা মুন্নীর ১১ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ৫ বছরের একটি কন্যা আর দেড় বছরের একটি ছেলে আছে। গত ২ বছর ধরে একটি মেয়েকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি। সেই মেয়েকে কেন্দ্র করেই রবিন তার স্ত্রী মুন্নীর ওপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতো।’

বিজ্ঞাপন

‘গত ২০ দিন আগে মুন্নী তার মাকে ফোন করে জানায়, তাদের ছেলের নিউমোনিয়া উপসর্গ দেখা দিলে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে থাকলেও রবিন কোনো খোঁজ নেয়নি। অন্য জায়গায় ভালো চিকিৎসা করানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শে রিলিজ নিয়ে বাসায় গেলেও ঢুকতে দেয়নি রবিন। এরপর সারাদিন বাইরে অবস্থান করার পর তাকে বাসায় ঢুকতে দেয়। পরে বাসায় শারীরিক নির্যাতন গত ১০ থেকে ১২ দিন হলো মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতনের মাত্রা বেশি চালানো হয়,’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

গত রোববারও (৩ মে) মুন্নী তার মাকে জানিয়েছিল, গত কয়েকদিন থেকে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে রবিন। এরপর সোমবার (৪ মে) সকালেও ফোন করে সে মাকে বলে, ‘রবিনের ভাবসাব ভালো লাগছে না। ও মনে হয় আমাকে মেরে ফেলবে।’

বিজ্ঞাপন

এরপর সোমবার দুপুরে রবিন তার শ্বশুরকে ফোন করে বলে, ‘নোয়াখালীর চাটখিলের একজন ইমামের মাধ্যমে মুন্নীকে পাঠিয়ে দেব।’ এরপর থেকে দুই জনের ফোনই বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলে আছরের নামাজের পরে রবিন তার শ্বশুরকে কল দিয়ে ঢাকা আসার জন্য বলে কল কেটে দেয়। এরপর তার ভগ্নিপতি কল দিয়ে জানায়, আপনাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আপনারা ঢাকায় আসেন। মরদেহ নিয়ে যান।

মুন্নীর চাচা বলেন, ‘রবিনের একটি মেয়ের সাথে পরকীয়া রয়েছে, যা নিয়ে মুন্নীকে প্রায়ই মারধর করত রবিন। মুন্নীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। মুন্নীকে সবসময় মানসিকভাবেও হেনস্তা করত। মুন্নীর বাড়ি সোনাইমুড়ী উপজেলায় আর রবিনের বাড়ি চাটখিলে।’ মুন্নীকে হত্যার ঘটনায় পরিবার থানায় অভিযোগ করেবে বলে জানিয়েছেন চাচা মুজিবর রহমান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মৃত মুন্নীর স্বামী আদাবর থানার এএসআই নজরুল ইসলাম রবিন বলেন, ‘পারিবারিক কলহ হয়েছে ঠিকই, তবে মুন্নী আত্মহত্যাই করেছে। বাসায় মেয়ে ছিল, কাজের বুয়া ছিল, আপনারা আসেন সবার কথা শোনেন। এরপর আমি দোষী হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে থানা পুলিশ।’

তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি অসুস্থ অবস্থায় এসআই রবিন তার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়েছিল, সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

মুন্নীর মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে। আগামীকাল ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন আদাবর থানার ডিউটি অফিসার কায়কোবাদ বিশ্বাস।

আত্মহত্যা খুনের অভিযোগ টপ নিউজ পারিবারিক কলহ স্ত্রী খুনের অভিযোগ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর