Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনার অজুহাতে প্রায় ৩২ হাজার কর্মীর বেতন কেটে নিল টিএমএসএস


৭ মে ২০২০ ০৫:১৩

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট:
বগুড়া: করোনার অজুহাতে ‘করজে হাসানত’ নামে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (টিএমএসএস) ৩১ হাজার ৯১৭ জন কর্মচারী কর্মকর্তার বেতন কর্তন করে দুই তৃতীয়াংশ প্রদান করেছে। এছাড়াও বিনা বেতনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ৮টি বিভাগ বন্ধ ঘোষণা করেছে।

টিএমএসএস’র বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩১ হাজার ৯১৭জন কর্মচারী-কর্মকর্তা ৮টি বিভাগের ৬৪ জেলার ৪ হাজার ৮৩৭টি ইউনিয়নের ২৯হাজার গ্রামে কাজ করছে। ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের ৪র্থ বৃহত্তম টিএমএসএস। প্রতিষ্ঠানটির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ফাইভ স্টার হোটেল সহ বিভিন্ন কলকারখানা রয়েছে। ২০২০-২১ সালের বার্ষিক বাজেট ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

করোনা পরিস্থিতিতে গত ৩১ মার্চ একটি আদেশ জারি করেন নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা।

ওই আদেশে বলা হয়, মার্চ মাস থেকে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই তৃতীয়াংশ বেতন দেয়া হবে। ওই কর্তন করা টাকাকে তিনি ‘করজে হাসানত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এরপর গত ৩০ এপ্রিল নির্বাহী পরিচালক আরেকটি আদেশ দিয়েছেন। তাতে শিক্ষা উন্নয়ন বিভাগ, অডিট, মনিটরিং, এসকিউএআর, জিজি, জিজিআইসি, আইসিপি, আইআইসিডি এই ৮টি বিভাগের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন বিহীন অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

কারণ হিসেবে তিনি লিখেছেন ১লা এপ্রিল থেকে কোন ভূমিকা রাখে নাই। এছাড়াও ডুয়েল সার্ভিস ডিডুকেশন জুন পর্যন্ত স্থগিত করাও হয়।

কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধান কাটার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি ওই আদেশে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পরিপালন করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত ধান কাটা সহ বিভিন্ন কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকার মাধ্যমে নিজেদের পারিবারিক চাহিদা পূরণ করবেন, টিএমএসএস থেকেও প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ পরিপালনের জোর নির্দেশ পত্র দেওয়া ছিল। কায়িক পরিশ্রম করে উপার্জন করলে ব্যায়ামের প্রয়োজন হয় না। সকলকেই কায়িক পরিশ্রম করার অনুরোধ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

টিএমএসএস’র পরিচালক (প্রশাসন) শাহজাদী বেগম জানান, বেতনের অংশটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নেয়া হবে। পরে তা প্রদান করা হবে।

৮টি বিভাগ বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ওই সব বিভাগের এখন আপাতত কাজ নেই। তাই বন্ধ করা হয়েছে। ধান কাটা বিষয়ে তিনি জানান, আমরা নিজেরাও ধান কেটেছি। টিএমএসএস’র কাজের অংশ এটা। এই ধানকাটা বলায় কোন অপরাধ নয়। বিষয়গুলো বুঝতে হবে আপনাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কর্মচারী-কর্মকর্তা জানান, করোনার প্রভাবে এমনিতেই জীবন জীবিকার অন্যান্য পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে এই বেতন কর্তন করা যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। অনেকেই বলেছেন, বকেয়া নামে যা রাখে টিএমএসএস তা কখনও প্রদান করে না। চাইলেই চাকরী চলে যাবে ভয়ে মুখ খোলে না কেউ।

বন্ধ ঘোষণা করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, করোনা কারণে সরকার সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ, টিএমএসএস’র নির্বাহী পরিচালক আদেশ দিয়েছেন, ১লা এপ্রিল থেকে ভূমিকা না রাখায় বিনা বেতনে ছুটির।

সারাবাংলা/এএইসএম/জেএইচ

করোনা কর্মী টিমএসএস বেতন কর্তন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর