চলতি মাসেই চীনের সঙ্গে ফ্লাইট চালু করবে বিমান বাংলাদেশ
৭ মে ২০২০ ১০:৩৬
ঢাকা: করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে সমগ্র বিশ্বের বিমান চলাচল থমকে গেছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বিমানের সব সিডিউল। অধিকাংশ দেশ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করেছে বহু আগেই। আর এই সংকটের মধ্যেই চীনের সঙ্গে বিমান চলাচল চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিমান।
বাংলোদেশ বিমান সূত্রে জানা গেছে, চীনের গুয়াংজুতে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। চলতি মে মাসের যেকোনো সময়ে এই রুটে বিমান চলাচল শুরু হবে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ বিমান গুয়াংজুতে ফ্লাইট চালুর জন্য চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছিলো কিন্তু অনুমোদন মিলেছে সম্প্রতি। ফলে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের নতুন সখ্যতার তৈরি হতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমানের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোকাব্বির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘চীনের অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। আর আমরা সবকিছু মেনেই ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছি। চীনের সঙ্গে শুধু যাত্রী না কার্গোরও একটা সম্ভবনা আছে। আপাতত বিশ্ব পরিস্থিতির জন্য আমরা সপ্তাহে একদিন গুয়াংজুতে ফ্লাইট চালু করবো। আমরা চেষ্টা করছি এই মাসেই যেন চালু করতে পারি। ৭৩৭ বিমান দিয়ে চালানো হবে। আর যাত্রী ধারণ ক্ষমতা থাকবে ১৬২ আসন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি আপনারা খারাপভাবে কেন নিচ্ছেন। এখনো চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। চীনের গুয়াংজুতে আগে প্রতিদিনই ফ্লাইট ছিলো ইউএস বাংলা ও চায়না সাউদার্নের। করোনার কারণে যাত্রী কম থাকায় এখন সপ্তাহে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে সংস্থা দুটি। কিন্তু ফ্লাইট তো চালু আছে। বাংলাদেশ বিমান তো আর করোনা আমদানি করছে না। আমরা নিয়মনীতি মেনেই ফ্লাইট চালু করবো।’
মার্চ থেকেই সারাবিশ্বের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাংলাদেশে উঠানামা বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে বিশেষ ফ্লাইট চলছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিমানের ১৭টি রুটের সবগুলো রুটের ফ্লাইট উঠানামা বন্ধ রয়েছে। একের পর এক অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ বিমান। কারণ একটাই করোনাভাইরাস। আর এর মধ্যেই নতুন রুটে বিমান চলাচল কতটুকু যুক্তিসঙ্গত হবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।
অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা এটাও বলছেন, বিমান বাংলাদেশ লোকসানের ওপর লোকসান দিচ্ছে। সেজন্য সরকারের কাছ কাছে বারবার সংস্থাটিকে ঋণও নিতে হচ্ছে। যেখানে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি চীনের গুয়াংজুতে যাত্রী না থাকায় অনেক এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট কমিয়ে এনেছে সেখানে সেই রুটে ফ্লাইট চালু কতোটুকু সফলতা বয়ে আনবে। একই সঙ্গে নতুন সার্ভিস বলেও তো কথা রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ বিমান গুয়াংজুতে আসলে কাঙ্খিতমাত্রায় যাত্রী পাবে কি না আর পেলেও এই মুহূর্তে সফলতা আসবে কি না সেসব বিষয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন তারা।
এ বিষয়ে অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আশীষ রায় চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, আইকাও নিয়ম মেনে যদি করা হয় তাহলে কোনো সমস্যা নেই। ইউএস বাংলা যেভাবে করছে সেভাবে কতটুকু করতে হবে। বাংলাদেশ বিমানের দায়িত্ব অনেক কারণ সংস্থাটি দেশের জাতীয় বিমান সংস্থা। আমরা এ বিষয়ে বিমানকে একটি নির্দেশনাও দিয়েছি। স্বাস্থ্যগতসহ নির্দেশনা মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই নয়তো বিমানখাতে যাত্রী পাওয়া নিয়েই সংশয় থাকবে। আমাদের সবার আগে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যাত্রীদের যদি নিরাপত্তা দিতে পারি তাহলে যাত্রী বেশি পাওয়া যাবে নয়তো আমরা যাত্রী পাবো না। কাজেই যাত্রীদের যেবিষয়টি নিয়ে চিন্তা সেটি হচ্ছে তাদের ফাস্ট সেফটি নিশ্চিত করা।
এ ছাড়া তিনি বলেন, আমাদেরকে এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। আমাদেরকে স্পষ্ট করে করে বলতে হবে, ভ্রমণ করুণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি নেই। তাহলে আগের মতোই আমরা যাত্রী পাবো এবং লোকসান কমে আসবে। তবে যাত্রী যদি মনে করে, নিরাপত্তা শতভাগ নয় তাহলে লাভজনক হওয়া সম্ভব নয়।