Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আয়েশ করে সবজি রান্না ও স্ত্রীর জন্য চা-কফি তৈরি করছি’


১০ মে ২০২০ ২১:৪৬

চলছে করোনাকাল। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে লকডাউনে স্থবির পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও এর বাইরে নেই। বেশিরভাগ মানুষই এখন করোনার বিস্তার রোধে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো এখানকারও স্বাভাবিক কাজকর্ম গেছে থেমে। কিন্তু জীবনতো থেমে নেই। ঘরে থেকেও মানুষ কিছু না কিছু করছে। আতঙ্ক থাকলেও ঘরে বসে থাকার মতো অখণ্ড অবসর এবারের মতো কখনও মেলেনি। তাই কখনও কখনও ব্যতিক্রম কাজ কর্ম করছেন কেউ কেউ। তেমননি একজন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এম এ মান্নান। করোনাকালে আয়েশ করে সবজি রান্না করছেন নিজেই। সেইসঙ্গে স্ত্রীর জন্য চা বা কফি বানানো ও ছাদ বাগানে ঘোরাঘুরি, বইপড়াসহ নানারকম কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন। এসবসহ উন্নয়ন ও অর্থনীতি নিয়েও কথা বলেছেন সারাবাংলা ডটনেটের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সারাবাংলার স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জোসনা জামান

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা: করোনাকাল কীভাবে কাটছে?

এম এ মান্নান: এখন অনেক সময় পাচ্ছি। তাই রান্না ঘরেই অনেকটা সময় কাটছে। বেশ আয়েশ করেই সবজি রান্না করছি। আমার স্ত্রী ছাদকৃষি করেছে। সেখান থেকে টাটকা টমেটো, বেগুন, বরবটি, ঢেড়শ, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন সবজি তুলে নিয়ে আসি। কাজের মেয়ে এসে কাটাকাটি ও পরিষ্কার পরিচ্ছতার কাজ গুলো করে দিয়ে চলে যায়। আমি দুপুরের পর রান্না ঘরে ঢুকি। রবীন্দ্র সঙ্গীতসহ বিভিন্ন বাংলা গান ছেড়ে দেই। তারপর ধীরে ধীরে সবজিগুলো রান্না করি। সেই সঙ্গে ডিমের অমলেট ও  নুডুলস করি। স্ত্রীর জন্য চা বা কফি বানাই। বেশ উপভোগ করছি। এর বাইরে ছাদে ব্যায়াম করি, বই পড়ি, স্ত্রীর সঙ্গে গল্প করি এবং প্রতিদিন আমার দুই সন্তানের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা করে ভিডিও কলে কথা বলি। আমার ছেলে লন্ডনে এবং মেয়ে থাকে আমেরিকায়। নাতি-নাতনিসহ তারা সবাই ভালো আছে।

সারাবাংলা: চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি’র কী অবস্থা?

এম এ মান্নান: গত ১৯ মার্চ সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হলো করোনা। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন থমকে আছে। কিছু মেগা প্রকল্পে কাজ চললেও অধিকাংশ প্রকল্পই স্থবির। তাই চলতি অর্থবছর সার্বিক সংশোধিত এডিপির বাস্তবায়ন অনেক কম হবে। তবে কত কম হবে সেটি এখনও বলা যাচ্ছে না। আইএমইডি’র মূল্যায়ন প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।

সারাবাংলা: আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) কেমন হতে পারে?

এম এ মান্নান: এডিপি তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এবার স্বাস্থ্য খাতে প্রেসার রয়েছে। অর্থাৎ করোনার কারণে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়বে। সেইসঙ্গে কৃষি খাতেও যথাযথ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে। কেননা এই বিপদের মধ্যে কৃষিই হলো একমাত্র ভরসা। বলা চলে কৃষিখাত বিপদে বন্ধুর মতো কাজ করেছে। ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে। কৃষির এই উৎপাদন ঠিক রাখতে এ খাতেও যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া অবকাঠামো খাতেও গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে মেগা প্রকল্পগুলোর বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। কেননা এগুলো তো শুধু প্রকল্পই নয়, এগুলোর একেকটা দেশের মানুষের স্বপ্নও।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা: মেগা প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দ কমবে না বাড়বে ?

এম এ মান্নান: ফার্স্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগা প্রকল্পগুলোকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এগুলো বরাদ্দ বাড়া বা কমার বিষয় নয়। কথা হচ্ছে যে, প্রকল্পের জন্য যেমন অর্থের চাহিদা রয়েছে সেটি পূরণ করা হবে। সেখানে যত টাকাই লাগুক। অর্থের অভাবে যাতে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সারাবাংলা: অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাজ কতদূর?

এম এ মান্নান: পরিকল্পিত অর্থনীতির বিকল্প নেই। আগামী ৫ বছরের জন্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়া তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। করোনা না থাকলে হয়তো এরই মধ্যে এটি অনুমোদন প্রক্রিয়ায় চলে যেত। কিন্তু এখন একটু সময় লাগছে। আমার টার্গেট হলো আগামী অর্থবছরের এডিপি আগে অনুমোদন করানো; তার পরপরই এনইসি বৈঠকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদনের উদ্যোগ নেব। এই পরিকল্পনায় আমরা করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।

সারাবাংলা: করোনায় ধাক্কায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি কেমন হতে পারে?

এম এ মান্নান: করোনার ধাক্কায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি নামবে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এটা বলতে পারি, জিডিপি গত কয়েকবছর যেভাবে বাড়ছিল সেটি আর বাড়বে না। এমনকি গত অর্থবছর যে পর্যায়ে পৌঁছেছিলাম সেই পর্যায়েও যেতে পারব বলে মনে হচ্ছে না। ঠিক কত নামবে সেটিও বলতে পারব না। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ বলেছে ২ থেকে ৩ শতাংশে নামবে। কিন্তু সেটি ঠিক নয়। তাদের কথা তারা বলবে। আমরা তর্কে যাব না। তবে আমি নিজের মতো করে যেটা বুঝি, করোনায় প্রবৃদ্ধি কমবে।

এম এ মান্নান করোনাকাল পরিকল্পনামন্ত্রী সাক্ষাৎকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর