ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন, দালাল-হাসপাতালকে ২২ লাখ টাকা জরিমানা
১৪ মে ২০২০ ০৯:৩৯
ঢাকা: স্বল্পমূল্যে অপারেশনের আশ্বাস দিয়ে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে ‘ভুয়া চিকিৎসক’ দিয়ে অপারশেনসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে মোহাম্মদপুরে প্রাইম হাসপাতালের মালিক ও দালালসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করা হয়। এমনকি ভর্তি রোগীদের কোনো ধরণের টেস্ট না করেই রিপোর্ট প্রিন্ট করে দিতো তারা।
এর আগে বুধবার (১৩ মে) দুপুর থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কলেজগেটের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারে অবস্থিত হাসপাতালটিতে অভিযান শুরু করে র্যাব।
র্যাব-২ এর এসপি মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকীর নেতৃত্ব অভিযান পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
অভিযান চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। অভিযানে দালাল ও হাসপাতালকে ২২ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সারওয়ার আলম বলেন, ‘সড়কদুর্ঘটনায় আহত এক রোগীকে পঙ্গু থেকে এই হাসপাতালে আনা হয়। প্রথমে তার সঙ্গে চুক্তি করা হয় ২০ হাজার টাকা। পরে বিভিন্নভাবে দেড়লাখের ওপরে খরচ নেওয়া হয়। তারা রোগীদের কমমূল্যে অপারেশনের আশ্বাসে এনে পাঁচ থেকে সাতগুণ বেশি টাকা হাতিয়ে নিতো। তাছাড়া মোহাম্মদ লাবলু নামে একজনকে দিয়ে অপারেশন করা হয়েছে। যে মূলত ‘ভুয়া ডাক্তার’। এর আগেও আমি তাকে জেল দিয়েছি। আমার আগের ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশাও তাকে একই অপরাধে আটক করে জেল দিয়েছিল। জেল থেকে বারবার বেরিয়ে সে একই পেশাতে নামে।’
এরা কতটা অমানবিক তা না জানলে কেউ বুঝবে না। এদের কাছে রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও খারাপ হয়ে গেছে। একজন রোগীর বাম পায়ের আঘাত নিয়ে ভর্তি হলে প্রথমে তার বাম পা এবং ডান পায়ের টিস্যু নেওয়ার কারণে পরবর্তীতে ডান পাও কেটে ফেলে তারা।
সারওয়ার বলেন, ‘পঙ্গু হাসপাতাল থেকে রোগীদের বাগিয়ে আনার কাজটি করে বাবু নামে একজন দালাল। সেই মূলত দালাল সর্দার। তাকে শ্যামলীর ওয়েলকেয়ার নামে একটি হাসপাতালে মদ্যপ অবস্থায় গ্রেফতার করে জেল দেওয়া হয়েছিল। বের হয়ে আবারও একই পেশায় নেমেছে।’
অভিযানে মোট ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল এবং ২২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে দালাল সর্দার বাবুকে একবছরের জেল এবং ১০ লাখ জরিমানা করা হয়েছে। তাছাড়া হাসপাতালটিকে ৬ লাখ এবং ৩ জন দালালকে ৬ লাখ (দুইলাখ করে) এবং বাকিদের নয় মাসের জেল দেওয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, ‘হাসপাতালটি রোগীদের কোনো প্রকার টেস্ট না করেই রিপোর্ট দিত। তারা টেস্টের টাকা নিলেও ভুয়া কাগজ প্রিন্ট দিয়ে বের করে দিত। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও সেটা ভালো না। বেশিরভাগ সময় রোগী আনলেও পাশের আরেকটি হাসপাতাল (টেককেয়ার) থেকে রোগীদের অপারেশন করত।’