যেভাবে চলতে হবে সাধারণ ছুটিতে
১৪ মে ২০২০ ১৪:১১
ঢাকা: বিকাল ৪টার পরে কোনো দোকান বা শপিং মল খোলা রাখা যাবে না, বেঁচা-কেনার সময় শপিং মলের সামনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ক্রেতাদের গাড়ি জীবাণুমুক্ত করাসহ বেশ কিছু বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এছাড়া ঈদের নামাজকে কেন্দ্র করে গণজমায়েত না করারও বিধিনিষেধ রয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে পঞ্চমবারের মতো সাধারণ ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেয়।
এবার ১৪ দিন বাড়ল সাধারণ ছুটি, কার্যকর ৩০ মে পর্যন্ত
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন করে বাড়ানো ছুটি চলবে ২৮ মে পর্যন্ত। ১৫টি বিধিনিষেধ সংবলিত প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সাধারণ ছুটি চলাকালীন সময়ে সাধারণ জনগণের চলাচল একদম সীমিত থাকবে। এক জেলা থেকে অন্য জেলা এবং এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যাতায়াত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবেন না। শুধু ওষুষ সংগ্রহ, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন, সৎকার কিংবা জরুরি জিনিষপত্র কেনা ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবেন না। আর এই সতর্কতা বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে বলা হয়েছে।
সাধারণ ছুটি চলাকালে জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের দিক নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। রমজান এবং ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দোকানপাটে ক্রয় বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শপিং মলের সামনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা, ক্রেতাদের গাড়ি জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখাসহ স্বাধ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিকাল ৪টার পর কোনো শপিংমল খোলা রাখা যাবে না।
তবে সাধারণ ছুটি চলাকালে জরুরি পরিসেবা যেমন, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থল বন্দর, নদী বন্দর এবং সমুদ্র বন্দরে কার্যক্রম ও টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা এবং সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এই ছুটির আওতায় পড়বে না। সড়ক ও নৌপথে চলাচল করা সকল পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকবে। কৃষিপণ্য, সার, বীজ, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্প, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এ ক্ষেত্রে ছুটি প্রযোজ্য হবে না।
চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স এবং ওষুধসহ সরঞ্জাম বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম (ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া) এবং ক্যাবল অপারেটর এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবেন। ওষুধ শিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী সকল কল কারখানা কর্তৃক শ্রমিকের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে শিল্প কারখানাগুলোকে স্বাস্থ্য বিভাগ যে নির্দেশনা দিয়েছে তা মেনে কারখানা চালু রাখার কথা বলা হয়েছে।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তীতে শিল্প কারখানা কৃষি ও উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এই সময়ে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। রমজান, ঈদ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা বিবেচনায় ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
সরকারের সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী অফিস খোলা রাখবে। সেইসঙ্গে তারা তাদের অধিক্ষেত্রের কার্যাবলি পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। অফিস চলাকালীন তাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। সাধারণ ছুটি চলাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। সড়ক পরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান, রেল চলাচল এবং অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। মহাসড়কে মালবাহী বা জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের বাইরো অন্যান্য যানবাহন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রন করতে বলা হয়েছে। আসতে ঈদুল ফিতর এর নামাজের ক্ষেত্রেও বর্তমানে বিদ্যমান বিধি বিধান প্রযোজ্য হবে। উন্মুক্ত স্থানে বড় জমায়েত পরিহার করতে হবে। এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এই পনেরো দফা নির্দেশনা নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।