যতই ঝড়-ঝাপটা আসুক মাথা উঁচু করে চলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
১৪ মে ২০২০ ১৫:৪৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বিজয়ের জাতি। আমাদের শুধু সেটা মনে রাখতে হবে যে আমরা বিজয়ের জাতি। যতই ঝড়-ঝাপটা আসুক, যত আঘাত আসুক, যাই আসুক না কেন আমাদের সবসময় বিজয়ী জাতি হিসেবে এ কথা চিন্তা করে মাথা উঁচু করে চলতে হবে।
বৃহস্পতিবার গণভবনে ভিডিও ককনফারেন্সে মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হিসাবে সরাসরি নগদ অর্থ প্রেরণ এবং মোবাইল ব্যাংকিং/অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা সংবলিত বোতাম টিপে স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ সালের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি প্রদানের কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড মাধ্যমে কিছু শিক্ষা সহায়তা দিয়ে থাকি। উচ্চ শিক্ষায় মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী সেই সহায়তা দেওয়া হয়। এখানে ট্রাস্টে স্থায়ী তহবিল গঠন করা আছে সেই তহবিলে বিত্তবানরা বা অনেক প্রতিষ্ঠান অনুদান দেন। সেই ট্রাস্টের মাধ্যমে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ২ লাখ ৯ হাজার ৬৭৪জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে উপবৃত্তি বাবদ ১০২ কোটি ৭৪ লাখ ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং টিউশন ফি বাবদ ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা বিতরণ করা হলো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছেলে মেয়েরা যারা খুব মেধাবী। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে এটা হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার নেতেৃত্বে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ের জাতি। আমাদের শুধু সেটা মনে রাখতে হবে যে আমরা বিজয়ের জাতি। যতই ঝড়-ঝাপটা আসুক যত আঘাত আসুক, যাই আসুক না কেন আমাদের সব সময় বিজয়ী জাতি হিসেবে এই কথা চিন্তা করে মাথা উঁচু করে চলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি। দেশবাসীকে বলব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশনা দিচ্ছে সেগুলো মেনে চলবেন। জীবন তো কখনো অচল হয়ে থাকতে পারে না। যে কারণে রোজার মাসে অনেকেরই জীবন-জীবিকার প্রয়োজন রয়েছে সে জন্য কিছু কিছু শিথিল করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমন একটা অদৃশ্য শক্তির প্রভাব এবং আঘাত যেটা কেউ চোখে দেখে না, জানেন না কিন্তু তার ফলে সমগ্র বিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে সামাজিকভাবে সারাবিশ্ব আক্রান্ত। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। আমাদের দেশেও আড়াই ’শ মতো মারা গেছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যেখানে দিনে হাজার হাজার মানুষ করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যুবরণ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। অন্যান্য দেশ যেভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বা আক্রান্ত হয়েছে। আমরা সেটা কিন্তু অনেক নিয়ন্ত্রণের রাখতে পেরেছি। তবে কতদিন মানুষকে আটকে রাখতে পারি? মানুষের জীবনের প্রয়োজনটা অনেক বেশি। মানুষের ক্ষতি হবে মৃত্যু হবে সেই চিন্তা করে যতই আমরা আটকে রাখি না কেন ক্ষুধার জ্বালাটা তার থেকে অনেক বেশি। মানুষের পেটে ক্ষুধা অন্ন যোগাতে হবে, কাজেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, তাদের জীবন মান চলমান রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোট ছোট শিশুরা কতদিন ঘরে বসে থাকবে। তাদের লেখাপড়ার সুযোগ করতে হবে। তাদের শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। একটা অদৃশ্য শক্তি এই শক্তি মোকাবিলা কোনো বিশ্বই পারছে না। যত শক্তিধর দেশ হোক সে অস্ত্রের দিক থেকে হোক আর অর্থের দিক থেকে শক্তি বহু শক্তিধর দেশ দেখেছি। করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এমন এক শক্তি যেখানে সব শক্তি পর্যুদস্ত হয়ে গেছে। এদের কাছে সকলের আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। তবে লাভবান হয়েছে প্রকৃতির। যেখানে বিশ্ব জলবায়ুর পরিবর্নের ফলে পরিবেশ প্রতিবেশ নষ্ট হয়েছিল নানা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল। কিন্ত দেখতে পাচ্ছি এই করোনার প্রভাবে জীবন যাত্রা সম্পূর্ণ অচল, প্রকৃতি কিন্তু তার আপন গতিতে হেসে খেলে উঠেছে। এটিই একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে গেছে সারাবিশ্বে।’