‘হাওরে শতভাগ, সারাদেশে ৪৮ শতাংশ বোরো ধান ঘরে’
১৪ মে ২০২০ ১৬:২৯
ঢাকা: সারাদেশে ৪৮ শতাংশ ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষক। আর হাওর এলাকায় এর সংখ্যা শতভাগ। কৃষকেরা সফলভাবে ঘরে ধান তোলার পাশাপাশি ন্যায্য দামে বিক্রিও করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বোরো ধানের দাম এবং ধান কর্তন অগ্রগতি বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে অনলাইনে মতবিনিময়কালে এসব তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে এ বছর ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে হাওরের শতভাগ এবং সারা দেশের শতকরা ৪৮ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। অঞ্চলভেদে ধানের বাজার দরের কম-বেশি রয়েছে। তাছাড়া ভেজা ও শুকনো ধান এবং মোটা-চিকন ধানের দামেও পার্থক্য রয়েছে।’
ব্রিফিংয়ে কৃষি বিভাগের ১৪টি অঞ্চল ও জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকদের পাঠানো তথ্য তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি জানান, হাওর অঞ্চলের সিলেট জেলায় বর্তমানে ভেজা ধান ৭০০-৭৫০ টাকা, শুকনা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা, মৌলভীবাজার জেলায় ভেজা ধান ৬৫০-৭৫০ টাকা, শুকনা ধান ৭৫০-৮০০ টাকা, হবিগঞ্জ জেলায় ভেজা ধান ৬৫০-৭০০ টাকা, শুকনা ধান ৭৫০-৮০০ টাকা, সুনামগঞ্জ জেলায় ভেজা ধান ৬৫০-৭৫০ টাকা, শুকনা ধান ৭৫০-৮০০ টাকা এবং নেত্রকোনা জেলায় ভেজা মোটা ধান ৬৫০-৬৮০ টাকা ও চিকন ধান ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কুমিল্লা অঞ্চলে ৭৭ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। কুমিল্লা জেলায় মোটা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা, চিকন ধান ৯০০ টাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ভেজা ধান ৬০০-৭০০ টাকা, শুকনা ধান ৮০০ টাকা এবং চাঁদপুর জেলায় মোটা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা ও চিকন ধান ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, খুলনা অঞ্চলে শতকরা ৭৩ ভাগ ধান কর্তন শেষ হয়েছে। খুলনা জেলায় মোটা ধান ৭৬০-৭৭০ টাকা, চিকন ধান ৮৮০- ৯০০ টাকা, বাগেরহাট জেলায় মোটা ধান ৭০০-৭৫০ টাকা, চিকন ধান ৮৫০- ৯০০ টাকা এবং সাতক্ষীরা জেলায় মোটা ধান ৮০০-৮২০ টাকা ও চিকন ধান ৯০০- ৯২০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
ময়মনসিংহ ও বরিশাল অঞ্চলেও কৃষকেরা ধানের ভাল দাম পাচ্ছেন। অন্যদিকে, রাজশাহী জেলায় ভেজা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা, নওগাঁ জেলায় মোটা ধান ৬০০-৬৫০ টাকা এবং চিকন ধান ৮৫০-৯০০ টাকা, রংপুর জেলায় ভেজা ধান ৬৮০-৭০০ টাকা এবং শুকনা ধান ৮১০-৮২০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী জানান, কৃষকের ধানের ন্যায্য মূল্যপ্রাপ্তি এবং করোনা সময়কালে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০ লাখ মেট্টিক টন ধান, ১.৫ লাখ টন আতপ চাল, ১০ লাখ মেট্টিক টন সিদ্ধ চাল, এবং ৭৫ হাজার মেট্টিকটন গমসহ ২২ লাখ ২৫ হাজার মেট্টিক টন খাদ্যশস্য কিনবে সরকার। কৃষকের ধান বিক্রয়ে যাতে সুবিধা হয় এজন্য ইউনিয়নে পর্যায়ে ২ হাজার ৬৭৩টি আর্দ্রতামাপক যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে।
কৃষকদের স্বার্থে সারসহ সেচ কাজে বিদ্যুত বিলের রিবেট বাবদ কৃষিখাতে ৯,০০০ কোটি টাকার ভর্তুকি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সার্বিক কৃষিখাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের ১৯,৫০০ কোটি টাকার বিশেষ ঋণ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।
‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে কোন জমি পতিত না থাকে এবং আবাদযোগ্য জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয় সেজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।