Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমে শুরু রাজশাহীর মধুমাস


১৫ মে ২০২০ ১৪:২৯

রাজশাহী: করোনাভাইরাসের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়লেও প্রকৃতির নিয়মেই পাক ধরেছে আমে। গাছ থেকে নামার সময়ও হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো সারাদেশের সব মানুষের পাতে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা না থাকলেও সে আম পাড়তে শুরু করেছেন বাগান মালিকরা। শুরুতেই সে তালিকায় এসেছে আঠি বা গুটি জাতের আম। এর মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে শুরু হলো মধুমাস জ্যৈষ্ঠের যাত্রা।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে থেকেই সময় বেঁধে দেওয়া ছিল, আজ শুক্রবার (১৫ মে) থেকে গুটি আম পাড়া যাবে। সে সময় মেনেই এতদিন অপেক্ষায় ছিলেন বাগান মালিকরা। জ্যৈষ্ঠ শুরু হতেই আর আম পাড়তে শুরু করেছেন তারা। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আম বাজারে আসতে কয়েকদিন লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এবার আম এখনো সেভাবে পোক্ত হয়নি। অন্যদিকে শ্রমিক সংকটও রয়েছে। সাধারণ ছুটির কারণে যেসব এলাকা থেকে আম পাড়ার শ্রমিক আসেন, তারা আসতে পারবেন না। ফলে প্রকৃত আম চাষিদের আম বাজারে আসতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।

স্থানীয় আম ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাস দুয়েক হলো চলা সাধারণ ছুটির মধ্যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নেই কারওই। অন্যদিকে চলছে রমজান মাস। এপরিস্থিতিতে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখনো আমের বাগান কিংবা আম কেনার ব্যাপারে আগ্রহই দেখাননি। অন্যদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা রাজশাহীতে আম কিনতে আসেন, তারা এবার আসার সুযোগ পাবেন না। সব মিলিয়ে এ বছর আম বিক্রি হবে কি নাম, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে যারা আম বাগান লিজ নিয়েছিলেন, তাদের চিন্তাটা বেশি।

রাজশাহী কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এবার জেলায় ১৭ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও পূরণ হবে না বলে মনে করছেন চাষিরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন এবার শুরুতেই আবহাওয়া বৈরী ছিল। তবে ফলন নয়, আম বিক্রি করা নিয়েই মূল শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী মহানগরীর আম চাষি আবুল হাসনাত সারাবাংলাকে বলেন, এবার আমের দাম না পেলে মারাত্মভাবে ক্ষতির মুখে পড়ব। কারণ গত দুই বছর ধরেই লোকসান হয়ে আসছে। করোনা আতঙ্কে এখনো পাইকারি আমের ক্রেতারা রাজশাহীতে আসেননি। এই অবস্থা চলতে থাকলে যে বাগান দেড় লাখ টাকায় কেনা আছে, সেখানে ৫০ হাজার টাকার আমও হয়তো বিক্রি করতে পারব না।

জেলার পবার নওহাটা এলাকার আম ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, বাজার শুরু হওয়ার পরেই বুঝতে পারবেন এবার দাম কেমন যাবে। আগের বছরগুলোতে গাছ থেকে আম নামানোর আগেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাহিদা আসে। এবার তেমন কোনো চাহিদা নাই।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন আম কখন পাড়তে হবে, তার একটি দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক আম আসবে বাজারে। বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়তগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে।

কোন আম আসবে কবে?

গুটি আমের মতো বাকি জাতের আম পাড়াও শুরু হবে পর্যায়ক্রমে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়েই। আর ক’দিনের মধ্যে চলে আসবে গোপাল, খিরসাপাতি, রানীপছন্দ, মোহনভোগ আর ল্যাংড়া। এদের পর আসবে ফজলী। সব শেষে মিলবে আশ্বিনা আর বারী-৪।

প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী গোপালভোগ আম চাষিরা নামাতে পারবেন ২০ মে থেকে। রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা ও বারী-৪ আম।

আম আম পাকা শুরু করোনাভাইরাস ক্রেতা সংকট গুটি আম মধুমাস রাজশাহীর আম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর