ফারাক্কা লং মার্চ এখনও প্রাসঙ্গিক— মির্জা ফখরুল
১৫ মে ২০২০ ২৩:৪৮
ঢাকা: ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের জন্য মওলানা ভাসানীর ফারাক্কা অভিমুখে লং মার্চ এখনো প্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফারাক্কা দিবসকে জাতীয় আন্দোলনের ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দিন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল কলেন, ‘আজ থেকে ৪১ বছর আগে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে সাড়া দিয়ে লাখো জনতা ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিলে অংশ নেন। কারণ, গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে ভারত সরকার বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার শুরু করে। যার ফলে বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়। ঐ এলাকায় পানিতে আর্সেনিকসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা না করে এবং প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে কয়েক দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। ভারত সেই সুযোগ নিয়ে এখনো ফারাক্কা বাঁধ চালু রেখেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে নির্লজ্জভাবে তা মেনে নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের জনগণ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত।’
তিনি বলেন, ‘এই বঞ্চনা ও দেশের প্রকৃতিক বিপর্যয়ে জনদুর্দশার আশঙ্কায় মওলানা ভাসানী জনগণকে সাথে নিয়ে ফারাক্কা অভিমুখে মিছিল করে বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। তখন থেকে ব্যাপক মানববিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফারাক্কা বাঁধের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচিত হতে থাকে।’
‘‘তাই আমি মনে করি, ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবসের তাৎপর্য এখনো অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে ৫৪টি অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণ করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করছে ভারত। তারা একতরফাভাবে নিজেদের অনুকূলে পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ হলে এবং তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা না পেলে বাংলাদেশ আরও একবার প্রাকৃতিক মহাবিপর্যয়ে পড়বে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশ এক সময় নিষ্ফলা উষর ভূমিতে পরিণত হবে।’
‘সুতরাং ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল ছিলো ন্যায্য পাওনা আদায়ের সংগ্রামে অকুতোভয় সাহসী পদক্ষেপ। তাই প্রতি বছর ১৬ মে ‘ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস’ অধিকার আদায়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।