জেএসএসের বিরুদ্ধে বিহার অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ
১৯ মে ২০২০ ০৩:৫৬
বিভিন্ন সময়ে খুন, গুম অপহরণের পর এবার সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) বিরুদ্ধে বিহার পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক বৌদ্ধ ভিক্ষু। সোমবার (১৮ মে) সকালে রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির ধুপশীলে অবস্থিত ‘ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’ এর প্রতিষ্ঠাতা ড. এফ দীপংকর মহাথের (ধুতাঙ্গ ভান্তে)।
তিনি এ ঘটনার জন্য সন্তু লারমা’র নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করেন। এবং পূর্ববর্তী সময়ে বিহারের সেবক ও বিহারে জনসংহতি সমিতির ভয়ভীতি প্রদর্শন, অপহরণ, হামলা-তাণ্ডবের ১৮টি ঘটনা তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. এফ দীপংকর মহাথের বলেন, ‘আমরা বৌদ্ধ ধর্মের অহিংস আদর্শ প্রচারে ব্রতী হলেও স্থানীয় আঞ্চলিক দল জেএসএস বরাবরই আমার সেবকদের হামলা, অপহরণসহ সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার রাতে বিহারে আগুন দিয়ে পবিত্র ত্রিপিটক, প্রচুর বুদ্ধমূর্তিসহ বিহারে রক্ষিত সবকিছুর ক্ষতিসাধন করে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়।’
এই বৌদ্ধ ভিক্ষু আরও বলেন, সাধারণত অন্য ধর্মাবলম্বী লোক দ্বারা উপাসনালয়ে হামলা হলেও ৯৯ শতাংশ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী বসবাসকারী বিলাইছড়ির ধুপশীলে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) এই কার্যকলাপ বৌদ্ধ ধর্মের শান্তিপূর্ণ প্রচারে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি এসময় প্রশাসনের কাছে স্থানীয়দের নিরাপত্তাসহ সকল ধর্মের মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে স্ব-স্ব ধর্ম পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, শ্রীমৎ মহান্মম ভিক্ষু, শ্রীমৎ মোদিয় ভিক্ষু, শ্রীমৎ জ্ঞাতিমিত্র ভিক্ষু, শ্রীমৎ প্রজ্ঞামিত্র ভিক্ষু।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিলোৎপল খীসার মুঠোফোনে একাধিবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রোববার জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ‘জনসংহতি সমিতির ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করা এবং সমিতির নেতাকর্মীসহ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একটি বিশেষ কায়েমী স্বার্থবাদী মহল এই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনসংহতি সমিতিকে দায়ি করছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জেএসএস আরও জানায়, ড. এফ দীপংকর ভান্তের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও বক্তব্য ওই এলাকায় শুরু থেকে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয়ভাবে জনগণের মধ্যে নানা বিভ্রান্তি ও বিভেদের সৃষ্টি করেছে। তারাও বিহারে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা এবং জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে বিহারে আগুনের ঘটনার জড়িতকরণের সকল প্রকার অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি জানান।