ফেনীর আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ফাঁকা- স্থানীয়দের নানা অভিযোগ
২০ মে ২০২০ ১৭:১৮
ফেনী: ‘আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে করোনার ভয়, সেজন্য আশ্রয় কেন্দ্রে যাইনি। মরলে বাড়িতে মরে যাবো। আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে সেখানে শুধু ছবি তুলে, সরকারকে দেখায়, সরকার থেকে বস্তায় বস্তায় চাল, ডাল, টাকা আনে আমরা কিচ্ছু পাই না। সেজন্য এবছর যাইনি। এর আগেও বহুবার গিয়েছি, কিছু পাইনি’। আশ্রয়কেন্দ্রে কেন যাননি? এমন প্রশ্নের জবাবে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের নদীভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার তাড়া নেই। প্রতিদিনের মতো চায়ের দোকান, গরু মহিষ পালন স্বাভাবিক কাজে ব্যস্ত রয়েছে তারা। শুধুমাত্র এ ইউনিয়নের জেলে পাড়ার অবস্থাটা কিছুটা ভিন্ন। জেলেরা মাছ শিকার করতে নদীতে নামেনি। পাড়ার চায়ের দোকানে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা। কিরণ জলদাস জানান, আজ আমরা নদীতে নামিনি। নদীতে ৯ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত চলছে।
‘আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি কেন?’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন দাবি করেছে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। বাস্তবে গিয়ে দেখা গেছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো মানুষ শূন্য।
চরচান্দিয়া ইউনিয়নের আজিজুল হক মায়মুনা উচ্চ বিদ্যালয় ও জেলে পাড়ার আশ্রয় কেন্দ্রে দেখা গেছে সুনসান নীরবতা । স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বুধবার বিকেল ৩টায় উপজেলার সবক’টি আশ্রয়কেন্দ্র মানুষশুন্য।
স্থানীয়রা জানান, চরচান্দিয়া ইউনিয়নে গতকাল রাতে ১৫-২০ জনকে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসলেও চিড়া, মুড়ি, গুড় ছাড়া রান্না করা খাদ্য না দেওয়ায় সেহরির সময় বাড়িতে চলে গেছেন তারা। ৪৩ টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৬৮ টি কেন্দ্রের সবগুলোই ফাঁকা।
তবে স্থানীয়দের এমন অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব। তিনি বলেন, মূলত তারা ঘর বাড়ি ছেড়ে আসতে চাচ্ছেন না। তারা অজুহাত দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন ৫০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে । প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৫ টি মেডিকেল টিম। মাঠে কাজ করছে ১৫০০ স্বেচ্ছাসেবক ।