পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হেনেছে আম্পান
২০ মে ২০২০ ১৭:৫১
ঢাকা: শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্পান পশ্চিম বাংলা উপকূলে আঘাত করেছে। বুধবার (২০ মে) বিকেল ৫টার পর পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত করেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আম্পান পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানায় রাজ্যটির রাজধানী ও প্রধান শহর কলকাতায় এই ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সামনে অসহায় হয়ে পড়তে পারে প্রদেশটি। আম্পানের গতিমুখ পুরোপুরি পশ্চিমবঙ্গের দীঘা ও সাগরদ্বীপ বরাবর। ঝড়টির প্রভাবে ভয়ংকর রকম উত্তাল হয়ে হয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকার সমুদ্র। সমুদ্র যেন আছড়ে পড়ছে ভারতের স্থলভাগে। তবে ঝড়টি এখনো বাংলাদেশ উপকূল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে ভারতের আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হচ্ছে, আম্পানের কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার, যা ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ ৩৪ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বিকেল ৪টার হিসাবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল আম্পান।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে সাগরদ্বীপের পূর্ব পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের অতিক্রম করতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর সমুদ্রবন্দর ও উপকূলীয় এলাকার পর এবার দেশের অভ্যন্তরেও মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে— যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর এবং মাদারীপুর অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার অথবা তারও বেশি বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, নদীবন্দরের জন্য চার নম্বর মহাবিপদ সংকেতই হচ্ছে চূড়ান্ত সতকর্তা।
এছাড়া দেশের অন্য অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিমি বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।