রেন্টাল বিদ্যুৎ বাতিল ও সিস্টেম সংশোধনের দাবি টিআইবি’র
২০ মে ২০২০ ২২:০৮
ঢাকা: দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতার একটি বড় অংশ অব্যবহৃত থাকায় বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া ও ভর্তুকি হিসেবে রাষ্ট্রের অপচয়ের বোঝা জনগণের সামর্থ্যের বাইরে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এই অবস্থায় রেন্টাল বিদ্যুৎপদ্ধতি দ্রুত বাতিল করে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-২০১৬ কে নতুন করে ঢেলে সাজাবার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (২০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে টিআইবি‘র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতার একটি বড় অংশ বর্তমানে অলস বসে থাকায় ২০২০ সালের এপ্রিল-জুন পর্যন্ত এ খাতে ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনোমিকস ফাইনান্সিয়াল অ্যানালিসিস (আইইইএফএ) এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশি স্থাপন করায় সরকারকে ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতি আরও দীর্ঘ হলে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ সক্ষমতার অপচয় বাবদ এপ্রিল-ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ৩৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় দাঁড়াবে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বিভাগ ইতোমধ্যে সরকারের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘৫৭% বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে বছরে ভর্তুকি ৯ হাজার কোটি টাকা’
টিঅঅইাবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, সরকারের পাওয়ার সেল জ্বালানি খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার স্বার্থে সেচের জন্য কৃষককে প্রদেয় ভর্তুকির টাকা কৃষি মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে দেওয়ার যে সুপারিশ করেছে তা অন্যায্য। অলস বসে থাকা বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ভর্তুকি দেওয়া চরম বৈষম্যমূলক। এমন গণবিরোধী পদক্ষেপ থেকে সরে এসে বরং বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে।’
অন্যদিকে, কয়লাবিদ্যুতের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি‘র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দেশে ২১ হাজার মোগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ থাকলেও সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎখাত থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নেও বাস্তব প্রচেষ্টা লক্ষণীয় নয়। সঠিক পরিকল্পনার ঘাটতি এবং চাহিদা না থাকার পরও শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কারণে একের পর এক কয়লা ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে জ্বালানি খাতে সংকট আরও প্রকট হয়েছে।’ এমন স্ববিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসে পরিবেশবান্ধব এবং আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী ১০০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।