Saturday 05 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মানবদেহে জীবাণুনাশক ব্যবহার ও প্রয়োগ বন্ধে আইনি নোটিশ


২০ মে ২০২০ ২৩:২১ | আপডেট: ২০ মে ২০২০ ২৩:২৩
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: জীবাণুমুক্তকরণের নামে মানবদেহে ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশ্রিত জীবাণুনাশক ব্যবহার বন্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৯ মে) জনস্বার্থে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।

নোটিশ প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মানবদেহে ব্যবহার কিংবা প্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত যে কোনো ধরনের ডিভাইজ যেমন বক্স/চেম্বার/ট্যানেল/গেইট/বুথ বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

পরিকল্পনা সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব, বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপচালক, আইইডিসিআরের পরিচালক, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী এবং পিআইডির প্রধান তথ্য কর্মকর্তাকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নোটিশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিনদিন বাড়ছে। এরইমধ্যে করোনার জীবাণু থেকে রক্ষার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বনের কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশে সম্প্রতি বক্স/চেম্বার/ট্যানেল/গেইট/বুথ এর মাধ্যমে সরাসরি মানুষের দেহে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে করোনার জীবানু দূর করার পদ্ধতি সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিতে দেখা যাচ্ছে।

গত ১৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সব সিভিল সার্জনকে চিঠি দিয়ে জীবাণুনাশক ট্যানেল ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু ১১ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্য বিধি সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। ওই বিধিমালার ১ নম্বর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক জীবাণুমুক্তকরণ ট্যানেল স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে। এক মাসের ভেতর সম্পূর্ণ বিপরীতমুখি সিদ্ধান্ত প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মানবদেহে কোনোভাবেই ব্লিচিং থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের জীবাণুনাশকের ব্যবহার নিষেধ করেছে। তারা বলেছে এইরূপ জীবানু নাশকের প্রয়োগ চোখ এবং চামড়ার বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। WHO জীবাণুনাশকের ব্যবহার শুধুমাত্র শক্ত আবরনের জিনিসের উপরিভাগে প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে। অর্থাৎ ফ্লোর, টয়লেট, মেটাল দ্রব্যাদি, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, আসবাপত্র, ইত্যাদি। মানুষের পরিচ্ছন্নতার জন্য সাবান এবং সীমিত ভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহারের কথা বলেছে WHO। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) স্পষ্ট করে তাদের গাইডলাইনে জানিয়েছে তারা স্যানিটাইজিং ট্যানেলের ব্যবহার সমর্থন করে না। এছাড়া তারা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, এরূপ জীবাণুনাশক প্রয়োগে করোনার ভাইরাস ধ্বংসের কোনো প্রমাণ নেই। স্যানিটাইজিং ট্যানেলে যে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় তা থেকে চোখ, চামড়া এবং শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতির কথা বলেছে ।

গত ১৯ এপ্রিল ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মানবদেহে জীবাণুনাশক ব্যবহার কোনো প্রকারেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে। একইসঙ্গে এই ধরনের রাসায়নিকের মাধ্যমে তৈরিকৃত জীবাণুনাশক শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতিকারক বলে নির্দেশনা জারী করেছে। মালয়েশিয়ান সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত গবেষণাতেও মানবদেহে এইরূপ জীবানুনাশক প্রয়োগ বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন এবং ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে যে কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে মানবদেহে জীবাণুনাশক ব্যবহার এবং প্রয়োগ বাতিল করেছে। এ অবস্থায় আমাদের দেশেও এগুলো বন্ধ করা জরুরি।

করোনাভাইরাস জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার