Thursday 17 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘করোনা প্রাণহানি ছাড়াও মানুষের রুটি-রুজির ওপর চরম আঘাত হেনেছে’


২৪ মে ২০২০ ২০:১২ | আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৮:১৬

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে সারাবিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। অগণিত মানুষের প্রাণহানি ছাড়াও এই মহামারি মানুষের রুটি-রুজির ওপর চরম আঘাত হেনেছে।

রোববার (২৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন, ‘সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য জরুরি কিছু সেবা ছাড়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে অফিস-আদালত, কল-কারখানা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু। লাখ লাখ মানুষ আজ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। হারিয়েছেন তাদের রুটি-রুজির সংস্থান।’

তিনি বলেন, ‘এসব কর্মহীন মানুষের সহায়তার জন্য সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছে। খাদ্য সহায়তা ছাড়াও দেওয়া হচ্ছে নগদ অর্থ। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৭ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৯১ কোটি ৪৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১০ কেজি টাকা দরে বিক্রির জন্য ৮০ হাজার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, মে মাসে দরিদ্র পরিবারের জন্য অতিরিক্ত ৫০ লাখ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তারা এই চাল কিনতে পারবেন। কাজ হারিয়েছেন কিন্তু কোনো সহায়তা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত নন এ ধরনের ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে মোট ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য দু-দফায় ১৭ কোটিরও বেশি এবং সারাদেশের মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনদের জন্য ১২২ কোটি ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, ততদিন এসব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া অনেক সদাশয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দরিদ্র জনগণের সহায়তায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণে এগিয়ে আসায় তাদেরকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং উৎপাদন ব্যবস্থাকে পুনরায় সচল করতে আমরা এরই মধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যা মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। রফতানিমুখী শিল্প, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প, কৃষি, মৎস্যচাষ, হাঁসমুরগী ও পশুপালন খাতসহ ১৮টি অর্থনৈতিক খাতকে এসব প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কাজ হারানো যুবক ও প্রবাসীদের সহায়তার জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনকে ৫০০ কোটি টাকা করে সর্বমোট ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই দুর্যোগ মুহূর্তে বোরো ধানের বাম্পার ফলন আমাদের জন্য আর্শীবাদ হয়ে এসেছে। এ বছর প্রায় ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। ইতোমধ্যে বোরো ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ।’

এই দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য কৃষক ও কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন ও ঈদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকরা যাতে ধানের ন্যায্য মূল্য পান সেজন্য আমরা ধান-চাল সংগ্রহ শুরু করেছি। চলতি মওসুমে ২২ দশমিক ২৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে, যা গত বছরের তুলনায় ২ লাখ মেট্রিক টন বেশি। ধান কাটা-মাড়াইয়ে সহায়তার জন্য আমরা কৃষকদের ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন্ড হারভেস্টর এবং রিপার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। এজন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম ধান কাটা-মাড়াইয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে। আমার নির্দেশ শিরোধার্য করে নিয়ে তারা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে কৃষকলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধান কাটায় সহায়তা করেছে। এ জন্য কৃষকদের কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয়নি। কৃষকেরা দ্রুত ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন।’

এ জন্য তিনি ছাত্রলীগকর্মীসহ যারা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের ধন্যবাদ ও  অভিনন্দন জানান।

আঘাত করোনা ভাইরাস প্রধানমন্ত্রী রুটি-রুজির শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

কবরী: স্মৃতিতে ‘মিষ্টি মেয়ে’
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর