Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাকিস্তানে সিনেটর হলেন এক হিন্দু নারী


৪ মার্চ ২০১৮ ১৬:৪২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শনিবার পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সিনেটর নির্বাচিত হয়েছেন একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী। কৃষ্ণা কুমারী নামে নির্বাচিত ওই নারী দলিত সম্প্রদায়ের।

পাকিস্তানের কোলহি সম্প্রদায়ের কৃষ্ণা কুমারী একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে সমধিক পরিচিত। তিনি সিন্ধু প্রদেশে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) হয়ে পাকিস্তান সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেট নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেখান থেকেই কুমারি কুরাতুলিন মারি নামে আরেকজনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

বিজয়ের পর সংবাদমাধ্যম এসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কুমারি বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত, আমি কখনো ভাবতেই পারিনি আমি সিনেট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারব।’

কৃষ্ণা কুমারী আরও বলেন, ‘দলিত মানুষের অধিকার আদায়ে আমি আমার কাজ চালিয়ে যেতে চাই। বিশেষ করে আমি নারীদের ক্ষমতায়নে, তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমি কাজ করব।’

এদিকে পাকিস্তানের সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেট নির্বাচনে আধিপত্য নিশ্চিত করেছে পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দলের এই জয়ই বলে দিল, এখনও নওয়াজেই আস্থা পাকিস্তানের।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন বেসরকারি ফলের বরাতে জানিয়েছে, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের ৫২ সিনেট আসনের মধ্যে পিএমএল-এন ১৫টি আসন পেয়েছে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ১২টি আসন। সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ পেয়েছে ছয়টি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম-এফ পেয়েছে দুইটি আসন। মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পেয়েছে দুইটি আসন। আর ১০টি আসনে জয় পেয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

গতকাল শনিবারের এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৩৩ প্রার্থী। পাঞ্জাব, সিন্ধ, খাইবার পাখতুনখাওয়া, বেলুচিস্তান ও কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত উপজাতীয় এলাকায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের এমপিরা সিনেটরদের নির্বাচনের জন্য এ ভোট দিয়েছেন।
পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ও মুসলিম লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পাঞ্জাবে মোট ১২টি আসনের মধ্যে ১১টিতেই জয় পেয়েছে পিএমএল-এন । দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধ প্রদেশের ১২টি আসনের মধ্যে ১০টিতে জয় পেয়েছে পিপিপি। দীর্ঘদিন ধরেই এ রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে দলটি।

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে ভালো ফল করেছে তেহরিক ই ইনসাফ। বেলুচিস্তান এবং আফগান সীমান্ত সংলগ্ন কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত উপজাতীয় অঞ্চলের অধিকাংশ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

শনিবারের নির্বাচনে পর ১০৪ সদস্যের সিনেটে মুসলিম লীগের মোট আসন সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৩। তবে সিনেটের চেয়ারম্যানের পদ বাগিয়ে নিতে হলে জোটের মিত্রদের কাছ থেকে আরও ২০ জন সিনেটরের সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে দলটিকে।
পিপিপির মোট আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০টি। তেহরিক-ই-ইনসাফের মোট আসন ১০, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট ৫ এবং জামায়াতে ইসলামীর মোট আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সংসদ দুই কক্ষবিশিষ্ট। উচ্চ কক্ষকে ডাকা হয় সিনেট নামে। সিনেটররা ৬ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। আর সিনেটে মোট ১০৪ আইন প্রণেতা থাকেন। তবে সিনেট সদস্যরা সবাই একবারে নির্বাচিত হন না। অর্ধেক অর্ধেক করে তিন বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় সিনেট নির্বাচন।

২০১২ সালে নির্বাচিত সিনেট সদস্যদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই বছরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। এরপরের নির্বাচন হবে ২০২১ সালে। ২০১৫ সালে নির্বাচিত সদস্যদের মেয়াদ শেষের পর ৫১ টি শূন্য আসনে নির্বাচন হবে।

বিজ্ঞাপন

এ নির্বাচনে ৫১ আসনের মধ্যে জয়ী হয়েছে সম্প্রতি দলের প্রধানের পদ হারানো প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করল নওয়াজের দল।

 

সারাবাংলা/এসবি/এমএ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর