ঢাকার চারপাশে হচ্ছে ৬ স্যাটেলাইট সিটি
২৮ মে ২০২০ ০৮:১০
ঢাকা: মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার পাশাপাশি রাজধানীতে জনসংখ্যার চাপ কমাতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে ঢাকার চারপাশে ছয়টি স্যাটেলাইট সিটি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এজন্য আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্বের (পিপিপি) তালিকায় স্যাটেলাইট সিটির প্রকল্পগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ মে (মঙ্গলবার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে নতুন এডিপি অনুমোদনের সঙ্গে এই তালিকাটিও অনুমোদন পেয়েছে। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.শহীদ উল্লা খন্দকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে মানুষের বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। ফলে একদিকে যেমন জীবনমান বাড়বে অন্যদিকে ঢাকার ওপর চাপ কমবে।’
তিনি জানান, দুই ধাপে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রথমধাপে মিরপুরে একটি টাউনশিপ ডেভেলপমেন্ট করা হচ্ছে। এটির কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে। পরের ধাপে বাকিগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সেগুলোরও সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হচ্ছে। আশা করছি, পর্যায়ক্রমে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
পকিল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপির পিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলো হলো- মিরপুর ইন্টিগ্রেটেড টাউনশিপ ডেভেলপমেন্ট (এমআইটিডি) প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পিপিপির পার্টনার হিসেবে বেসরকারি অংশ থেকে ধরা হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। আর সরকার দেবে ৫০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত অনুমোদনের পর প্রাইভেট পার্টনারের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। সেইসঙ্গে সাইটও হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে নকশা তৈরির কাজ চলছে।
এছাড়া মিরপুর ইন্টিগ্রেটেড টাউনশিপ ডেভেলপমেন্ট ফেইজ-২ শীর্ষক প্রকল্পটি এরই মধ্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) অনুমোদন লাভ করেছে। এটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেসরকারি অংশে ধরা হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পটির জন্য পিপিপি পার্টনার খোঁজা হচ্ছে।
এদিকে ‘ডেভেলপমেন্ট অব স্যাটেলাইট টাউনশিপ প্রোজেক্ট অ্যাট ধামরাই উপজেলা অ্যাট ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রাথমিক কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সমীক্ষা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এরপরই ব্যয় নির্ধারণসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শুরু হবে। এই প্রকল্পটি পিপিপির তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। একই অবস্থায় থাকায় অন্য দুটি প্রকল্প হচ্ছে- ‘ডেভেলপমেন্ট অব স্যাটেলাইট টাউনশিপ প্রোজেক্ট অ্যাট সাভার উপজেলা অ্যাট ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট’ এবং ‘ডেভেলপমেন্ট অব স্যাটেলাইট টাউনশিপ প্রজেক্ট অ্যাট সিরাজদিখান উপজেলা অ্যাট মুন্সিগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট।’
সূত্র জানায়, পিপিপির তালিকায় থাকা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আরও কয়েকটি বৃহৎ প্রকল্প হচ্ছে- খানজাহজান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা শহরের চতুর্দিকে বৃত্তাকার রেললাইন নির্মাণ, ধীরাশ্রম রেলওয়ে স্টেশনের কাছে নতুন আইসিডি নির্মাণ, ঢাকা বাইপাস সড়ক তৈরি, ঢাকা (জয়দেবপুর)-ময়মনসিংহ সড়ক উন্নয়ন, গাবতলী-নবীনগর মহাসড়ক উন্নয়ন, হাতিরঝিল (রামপুরা ব্রিজ) বনশ্রী-শেখেরজাইগ-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক উন্নয়ন (তারাবো ও চট্টগ্রাম লিংকসহ)।
এছাড়া চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন অব্যবহৃত জমিতে ৫০ আসনের একটি মেডিকেল কলেজ ও ৫০ আসনের একটি নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং বিদ্যমান রেলওয়ে হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণ প্রকল্প পিপিপির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি সরকারি বেসরকারি অংশিদারিত্ব