‘সরকার ছাড় দিয়েছে, অপপ্রয়োগ করলে হিতে বিপরীত হবে’
২৮ মে ২০২০ ১৯:৩২
ঢাকা: জীবিকা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিতে সাধারণ ছুটি আর না বাড়ালেও ১৫ জুন পর্যন্ত চলাচলসহ সবকিছুতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে সরকার সুযোগ দিলেও সেই সুযোগের অপব্যবহার যেন কেউ না করেন, সে আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ‘ফ্রি-স্টাইলে’ সরকারের দেওয়া ছাড় অপব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি ধর্ম-বর্ণ পেশা নির্বিশেষে সবাইকে ‘অদৃশ্য শত্রু’ করোনা মোকাবিলার আহ্বান জানান। করোনা সংকটকে পুঁজি করে কেউ রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইলে সে কৌশল আত্মঘাতী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায়ে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউন শিথিল করেছে। কোথাও কোথাও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু হয়েছে। আমাদের পাশের দেশ ভারত ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি দেশের তালিকায় থেকেও অর্থনীতির স্বার্থে লকডাউন শিথিল করেছে। জীবন ও জীবিকার মাঝে ভারসাম্য তৈরি, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, সামাজিক শৃঙ্খলা ও সুরক্ষার স্বার্থেই আমাদের সরকারও সাধারণ ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখানে অবশ্য পালনীয় কিছু শর্ত থাকছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সিদ্ধান্তসহ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আমি দেশবাসীকে, বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি খাতসহ সবাইকে এসব শর্ত কঠোরভাবে প্রতিপালনের অনুরোধ জানাচ্ছি। নিজেদের স্বার্থেই এগুলো মেনে চলতে হবে।
গণপরিবহণ চালুর বিষয়ে কাদের বলেন, সরকার গণপরিবহনও চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে বিআরটিএ’র সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটি পরিকল্পনা নিতে অনুরোধ করছি। গণপরিবহন পরিচালনায় যাত্রী, পরিবহন চালকদের সুরক্ষার সুনির্দিষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে। মনে রাখতে হবে, যেন সংক্রমণ আরও ঘনীভূত না হয়। মালিক-শ্রমিক-যাত্রী সবাইকেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আগামীকাল পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বিআরটিএ’কে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দিয়েছি।
গণপরিবহনের চালক ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধির পাশাপাশি ট্রাফিক আইনও যথাযথভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনায় মৃত্যুর পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায় যেন মৃত্যুর মিছিল দেখতে না হয়, আমি সবাইকে সে বিষয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে জীবন-জীবিকার মাঝে সাযুজ্য বিধানের যে প্রয়াস চলছে, তার থেকে বাংলাদেশে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তার সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বে আমরা এর আগেও অনেক সংকট থেকে উত্তরণ লাভ করেছি। আপনারা মনোবল না হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রাখুন। সরকারকে সহযোগিতা করুন। সংকটকে সম্ভাবনায় রূপদানে আল্লাহ আমাদের সহায় হোক।