সোশ্যাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিচ্ছেন ট্রাম্প
২৯ মে ২০২০ ০০:৪৬
যুক্তরাষ্ট্রে এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোর (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব) বিরুদ্ধে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংশোধিত এই আদেশের মাধ্যমে প্লাটফর্মগুলোর ব্যাপারে রাষ্ট্র প্রদত্ত আইনি নিরাপত্তার ক্ষেত্রগুলো নতুন করে নির্ধারণ করা হবে। খবর বিবিসি।
অর্থাৎ, এই নির্বাহী আদেশ সই হলে ফেসবুক বা টুইটার যদি চাতুরির আশ্রয় নিয়ে কোনো ব্যবহারকারীর পোস্ট ব্লক করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন ব্যবহারকারী।
President @realDonaldTrump just took executive action to fight online censorship by tech corporations, including social media platforms. pic.twitter.com/W4r7vLw958
— The White House 45 Archived (@WhiteHouse45) May 28, 2020
এদিকে মার্কিন যোগাযোগ শালীনতা আইনের ২৩০ ধারায় উল্লেখ আছে যে, ব্যবহারকারীর পোস্টে অশ্লীল, নিপীড়নমূলক বা সহিংস কোনো কিছু থাকলে প্লাটফর্মগুলো (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব) কোনো কারণ না দেখিয়েই সেই পোস্টগুলো রিমুভ বা ব্লক করতে পারবে। নতুন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এক্ষেত্রে ‘সিলেক্টিভ সেন্সরশিপ’ আরোপ করা হবে। যার ফলে যদি কোনো পোস্ট প্লাটফর্মগুলোর পক্ষ থেকে সম্পাদনা করে প্রকাশ করা হয় সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকবে না।
কিন্তু, যদি চাতুরির আশ্রয় নিয়ে (ওয়েবসাইটের টার্মস অ্যান্ড সার্ভিসে উল্লেখ নেই এমন কোনো অজুহাত দেখিয়ে) ব্যবহারকারীর পোস্টগুলো প্লাটফর্ম থেকে ব্লক বা রিমুভ করা হয় তাহলে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবেন ব্যবহারকারী।
এছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে সরকারি বিজ্ঞাপন প্রচার নীতিমালা রিভিউ ও হোয়াইট হাউজের টেক বায়াস রিপোর্টিং টুল পুনরায় চালু করার ব্যাপারে ওই নির্বাহী আদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে। ওই টুলের মাধ্যমে যে কোনো নাগরিক যদি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হেনস্থার শিকার হন তবে রাষ্ট্র বরাবর অভিযোগ করতে পারবেন।
এর অনেক আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন কনজারভেটিভদের (রিপাবলিকান মতাদর্শের) কন্ঠরোধ এবং তাদের মতপ্রকাশে সেন্সরশিপ আরোপের অভিযোগ করে আসছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ ব্যাপারে রিপাবলিকান দলের আরেকজন কংগ্রেসম্যান বিবিসিকে বলেছেন, টুইটার তার ‘ফোরাম’ পরিচয়ের উর্ধ্বে উঠে ‘পাবলিশার’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাইছে।
সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দুইটি টুইটার বার্তায় ‘ফ্যাক্ট-চেক লেবেল’ সেঁটে দেওয়ার পর টুইটারেই প্রেসিডেন্ট যে হুমকি-ধামকি দিচ্ছিলেন, তাতে করে এ ধরনের পদক্ষেপ প্রত্যাশিতই ছিল বলে উল্লেখ করেছেন নিউ মিডিয়া অ্যানালিস্টরা।
অন্যদিকে নতুন এই নির্বাহী আদেশের ব্যাপারে বহুল আলোচিত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টুইটার ও গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউবের কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও, ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন, সেন্সরশিপ নিয়ে বিচলিত কোনো সরকার যদি সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকেই সেন্সরশিপের আওতায় আনতে চায় – তাহলে এই সিদ্ধান্তকে যথাযথ বলা যায় না।
২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে ক্যাম্পেইন চালানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তড়িঘড়ি করে সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত এই নির্বাহী আদেশ জারি করলেন কি না – সে ব্যাপারেও সচেতন পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মিডিয়া অ্যানালিস্টরা।