জীবাণুনাশক টানেল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো মন্ত্রণালয়
৩০ মে ২০২০ ১৬:৫৫
ঢাকা: সারাবাংলায় রিপোর্ট প্রকাশের পরে জীবাণুনাশক টানেল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নতুন জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ১২ দফা স্বাস্থ্য বিধির কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে সারাবাংলা ডটনেটে জীবাণুনাশক টানেল: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘হ্যাঁ’, অধিদফতরের ‘না’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
শনিবার (৩০ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব খন্দকার জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১২ দফা স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে ১২ দফা স্বাস্থ্য বিধি দেওয়া হয়েছিল সেগুলো হলো:
১. অফিস চালু করার পূর্বে অবশ্যই প্রতিটি অফিস কক্ষ, আঙিনা ও রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
২. প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার বা থার্মোমিটার দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে অফিসে প্রবেশ করাতে হবে।
৩. অফিস পরিবহনগুলো অবশ্যই শতভাগ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যানবাহনে বসার সময় পারস্পরিক ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সবাইকে মাস্ক (সার্জিক্যাল মাস্ক অথবা তিন স্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক, যা নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখবে) ব্যবহার করতে হবে।
৪. সার্জিক্যাল মাস্ক শুধু একবার ব্যবহার করা যাবে। কাপড়ের মাস্ক সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে।
৫. যাত্রার পূর্বে এবং যাত্রাকালীন পথে বারবার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
৬. খাওয়ার সময় শারীরিক দূরত্ব (ন্যূনতম তিন ফুট) বজায় রাখতে হবে।
৭. প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর হাত সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৮. অফিসে কাজ করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৯. কর্মস্থলে সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং ঘন ঘন সাবান পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
১০. কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন সাধারণ নির্দেশনাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিয়মিত মনে করিয়ে দিতে হবে এবং তারা স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলছে কি না তা মনিটরিং করতে হবে। ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১১. দৃশ্যমান একাধিক স্থানে ছবিসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
১২. কোনো কর্মচারীকে অসুস্থ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এর আগে, ২৮ মে সাধারণ ছুটি না বাড়ালেও জনচলাচল সীমিত রাখাসহ সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কঠোর বাধ্যবাধকতা রেখে সবকিছু সীমিত আকারে খোলা রাখার নির্দেশনা দেয় সরকার। এ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৩ দফা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলেছে সরকার।স্বাস্থ্য বিধির সেই ১৩ দফার শুরুতেই ছিল করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।
এ নিয়ে সারাবাংলা ডটনেটে রিপোর্ট প্রকাশিত হয় জীবাণুনাশক টানেল: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘হ্যাঁ’, অধিদফতরের ‘না’ শিরোনামে।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকেও জীবাণুনাশক টানেল ব্যবহার না করতে বলা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৩ দফা স্বাস্থ্যবিধিতে পরিবর্তন আসবে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুবিভাগ) রীনা পারভীন রীনা পারভীন বলেন, এই মুহূর্তে এ কথা আমি বলতে পারব না। কারণ এটা আমি করিনি। স্বাস্থ্য অধিদফতর বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যা কিছু বলছে, সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখব। তারপর সিদ্ধান্ত হবে। তাছাড়া এটি একটি সরকারি আদেশ। তবে এটি জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই চিন্তাভাবনা চলবে। যেখান থেকে আদেশটি এসেছিল, সেখান থেকেই পরিবর্তন হতে পারে।