সরকারের ইচ্ছা কি দেশকে বধ্যভূমি বানানো?— রিজভী
৩১ মে ২০২০ ১৬:৪৪
ঢাকা: সব কিছু খুলে দিয়ে সরকার কি দেশকে বধ্যভূমি বানাতে চাচ্ছে?— প্রশ্ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। রোববার (৩১ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
‘বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই ছুটি প্রত্যাহার করা হয়েছে’— আওয়ামী নেতার এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে রিজভী বলেন, “যে বিশেষজ্ঞগণ ‘মৃত্যু-বীজ’ ছড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা কোন বিষয়ের ওপর বিশেষজ্ঞ, সেটাই এখন অনুসন্ধানের বিষয়। এরকম বিশেষজ্ঞ ভারতের মতো দেশে পাওয়া গেল না কেন? সেখানে কেন ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ রাখা হয়েছে ?”
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আইএলও’র নির্দেশনা অমান্য করে এবং টেকনিক্যাল কমিটির মতামত সরাসরি অগ্রাহ্য করে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। গণবিরোধী সরকার কখনোই গণমুখী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কারণ, তারা সব সময় চিন্তা-বিভ্রাটের মধ্যে থাকে।’
রিজভী বলেন, ‘করোনা বিস্তারের প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে লকডাউন শিথিলের পরিণতি বিভিন্ন দেশে বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। অন্যান্য দেশে করোনা কমে আসার পর লকডাউন শিথিল করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে পরিণতি হয়েছে সর্বনাশা বিপর্যয়ের। সেখানে নতুন করে ধেয়ে এসেছে করোনাভাইরাসের তাণ্ডব। বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা সারা বিশ্বের তুলনায় সর্বনিম্ন।’
‘ব্যাঙের ওপর বাচ্চাদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ খেলার মতো বাংলাদেশ সরকার মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির মধ্যে ২৬ শতাংশ মরেছে গত এক সপ্তাহে। আক্রান্ত হওয়া লোকের মধ্যে ২৮% শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে গত সাত দিনে। তার পরও সবকিছু খুলে দিয়ে সরকারের ইচ্ছা কি সারাদেশকে বধ্যভূমি বানানো ?’
করোনা পরিস্থিতিতে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা হবে। এই জন্য বাস-মিনিবাসের ভাড়া ৮০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিএ)।
এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ নীতি আওয়ামী সরকারের প্রতিষ্ঠিত কর্মসূচি। জনগণকে জিম্মি করে রক্তচোষার নীতি এদের একমাত্র চালিকাশক্তি। একে তো করোনার আঘাতে জনজীবন মহাবিপর্যয়ের মধ্যে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা এই সপ্তাহে বাঁধভাঙা পানির মতো জনজীবনকে গ্রাস করেছে। ‘দিন আনে দিন খাওয়া মানুষ’, দিনমজুর, রিকশা চালকসহ নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এর ওপর এই ভাড়া বৃদ্ধি ঐ নিরন্ন ও বিপন্ন মানুষের ওপর কষাঘাত।”