Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুলছে চবির অফিস, স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই


৩১ মে ২০২০ ১৮:১৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের নতুন হটস্পট হিসেবে পরিচিতি পাওয়া চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে বেড়েছে সংক্রমণের ঝুঁকি। তাছাড়া হাটহাজারী উপজেলায় করোনার সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ থাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) কর্মরতদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই খুলছে চবি’র বিভিন্ন অফিস। তবে ক্লাস-পরীক্ষা এখনই চালু হচ্ছে না। এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

রোববার ( ৩১ মে) সকাল থেকেই সীমিত পরিসরে খুলছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন অফিস। করোনা উপসর্গ নিয়ে এক কর্মচারীর মৃত্যু হলেও ক্যাম্পাসে অবস্থানরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস করতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চালু হওয়ার আগে বলতে গেলে কোনো অফিসই জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। আবার অফিস চালুর আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা অন্য কোনো জীবাণুনাশকের ব্যবস্থাও করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতি কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো মৌখিকভাবে জানিয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলছেন, জীবাণুমুক্ত করা তো দূরের কথা, দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর অফিস চালুর আগে ধুলাবালি পর্যন্ত পরিষ্কার করা হয়নি। এর মধ্যে গতকাল (শনিবার) এক কর্মচারীর করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়ায় তারা আতঙ্কের মধ্যে আছেন।

জানা গেছে, গতকাল মৃত্যুবরণ করা ওই কর্মচারী ছিলেন চবি প্রকৌশল দফতরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। চবি মেডিকেল সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তার। তবে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা জানতে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

কেবল ওই কর্মচারীর মৃত্যুই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় যে এলাকায় অবস্থিত, সেই হাটহাজারী উপজেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই বেশি। এখন পর্যন্ত এই উপজেলায় ১২০ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এই উপজেলার একজন মারাও গেছেন। ফলে চবি এলাকায় করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, অফিস খুললে অফিস করতেই হবে। তবে অফিস খোলার আগেই যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করা ‍উচিত ছিল।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির সভাপতি রশিদুল হায়দার চৌধুরী জাবেদ সারাবাংলাকে বলেন, আমরা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলছি। জীবেনর ঝুঁকি নিয়ে অফিস করতে পারব না। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সে অনুযায়ী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে আগে। কোনো অফিস জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। এর আগে যে স্বাস্থ্যবিধি এসেছিল, সেটিও ঠিকমতো পালন করা হয়নি। আমরা চাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস খোলা হোক। সে ক্ষেত্রে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, আজ অফিস খুললেও উপস্থিতি ছিল কম। কারণ বাস শহরে যেতে পারেনি। তবে আমি নিজ দায়িত্বে মাস্ক, গ্লাভস পরে অফিসে এসেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অফিসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুমুক্ত করার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় আমি নিজেকে নিরাপদ বোধ করছি না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, অফিস খুললেও পুরোদমে খোলা হয়নি। স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে খোলা হয়েছে। নিজেদের তো সুরক্ষিত রাখতে হবে। যেহেতু এটি সরকারি সিদ্ধান্ত, তাই আমাদের অফিস খোলা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অফিস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রক্টর বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না এবং ক্যাম্পাসে অবস্থানরত কর্মচারীদের মধ্যে যাদের প্রয়োজন হবে, তারাই অফিসে আসবে। আজ মাত্র অফিস খুলছে। একদিনে তো সম্ভব না। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চবি অফিস স্বাস্থ্যবিধি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর