৪০০ জনকে পাচার করেছেন হাজী কামাল, মুক্তিপণের টাকাও নিতেন তিনি
১ জুন ২০২০ ২৩:০৯
ঢাকা: র্যাবের হাতে গ্রেফতার মানবপাচারকারী চক্রের মূল হোতা হাজী কামাল গত ১০ মাসে অন্তত ৪০০ লোককে বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন। সম্প্রতি লিবিয়ায় নিহত ও আহতদেরও বেশিরভাগ লোককেই হাজী কামাল পাঠিয়েছেন। লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাচারকারী চক্র পরিবারের কাছ থেকে যে মুক্তিপণ আদায় করেছে, তার সব টাকাই হাজী কামালের মাধ্যমে পরিশোধ করেছে।
সোমবার (১ জুন) দুপুরে র্যাব-৩ এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ডের পর নিহত ও আহতদের পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী সবাই হাজী কামালকে মুক্তিপণের টাকা দিয়েছে। এরপরও কেউ সন্তানদের ফেরত পাননি। হাজী কামালকে গ্রেফতারের সময় পাওয়া ডায়েরিতেও টাকা নেওয়ার তথ্য রয়েছে। কামাল নিজেও স্বীকার করেছেন টাকা নেওয়ার কথা। আর কামাল এসব টাকার একটি অংশ বিদেশে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাতেন।
রয়াব-৩ এর সিও বলেন, ‘কামালের কাছে পাওয়া ডায়েরিতে অন্তত ৪০০ ভিকটিম ও তার পরিবারের মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা পাওয়া গেছে। যাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। ওই ডায়েরিতে ১০ জন দালালের তথ্য পেয়েছে র্যাব। যারা কামালের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। দালালরা ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, কোলকাতা, মুম্বাই, দুবাই, মিশর ও লিবিয়াতে পাচারের কাজ করে থাকেন। তাদের নাম ঠিকানা সব পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা হচ্ছে না।’
সিও বলেন, ‘হাজী কামালের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি গত ১৫ বছর ধরে ঢাকায় বাস করছেন। এর মধ্যে ১০ বছর ধরেই মানবপাচারের কাজ করে আসছেন কামাল। তার কাছ থেকে বিভিন্ন মানুষের ৩১টি পাসপোর্ট ও একাধিক ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করা হয়েছে। তার সম্পদের খোঁজ করা হবে। ব্যাংকের মাধ্যমে কোথায় কোথায় টাকা গেছে, তা জানার পর মানি লন্ডারিংয়ের মামলাও হবে তার বিরুদ্ধে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিও বলেন, ‘হাজী কামালের কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি নেই। তিনি মূলত টাইলস কাজের ঠিকাদার। এর আড়ালেই মানবপাচার করতেন তিনি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লিবিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে যাওয়াদের মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ লোকই কামালের মাধ্যমে গেছেন। কামালকে মাদারীপুর রাজৈর থানা ও কিশোরগঞ্জের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’