Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চাকরি হারানোর আতঙ্কে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মীরা


৩ জুন ২০২০ ০৮:২৯

ঢাকা: নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজে চলছে কর্মী ছাঁটাই। করোনভাইরাসে কারণে অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ তাদের কর্মীদের নিয়মতি বেতন দিচ্ছে না। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কর্মীদের মাসিক বেতনের অর্ধেক দিচ্ছে। আয় কমে যাওয়ায় অনেক ব্রোকারেজ হাউজ থেকে কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে। এতে করে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউজের কর্মীরা চাকরি হারানোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২৫০টি এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১৭৩টির মতো ব্রোকারেজ হাউজ রয়েছে। সারাদেশে এসব ব্রোকারেজ হাউজে কয়েক হাজার শাখা অফিস রয়েছে। এইসব শাখায় প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার মন্দা থাকায় আর্থিক লেনদেন তলানি নেমেছে। আর লেনদেন কমে যাওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজের আয় কমে গেছে। কারণ লেনদেনের ওপর কমিশনই ব্রোকারেজ হাউজগুলোর প্রধান আয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। এতে করে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর গত এপ্রিল ও মে মাসে কোনো আয় ছিল না। এতে করে অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউজের কর্মীদের মার্চ মাস থেকে বেতন বকেয়া পড়েছে। বেশিরভাগ ব্রোকারেজ হাউজ কর্মীদের গত ঈদে কোনো বোনাস দিতে পারেনি। এ অবস্থায় ডিএসই ও সিএসই’র বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের কর্মীদের মধ্যে নতুন করে শুরু হয়েছে চাকরি হারানোর আতঙ্ক।

এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই পুঁজিবাজারে মন্দা অবস্থা চলছে। খারাপ পরিস্থিতির শুরু চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই। আর মার্চ মাসে করোনার প্রকোপ শুরু হলে তো পুঁজিবাজারে লেনদেন টানা বন্ধই ছিল। এই সময়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলো কোনো ব্যবসা করতে পারেনি।

শরীফ আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কোনো আয় নেই। তারপরও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও অফিস ভাড়া দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় অনেক হাউজ বেতন দিতে পারছে না। তারপরও কষ্ট হলেও এই সময়ে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই করে, তা অমানবিক হবে। আমরা তা সমর্থন করি না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আমরা সরকারের কাছে ওয়ার্কি ক্যাপিটাল হিসাবে প্রণোদনা চেয়েছি।

সূত্র জানায়, গত রোববার (৩১ মে) পুঁজিবাজারে লেনেদেন শুরুর প্রথম দিনেই মাল্টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন মিাল্টি সিকিউরিটিজের ডিএসই ব্রাঞ্চের ইনচার্জ মো. হাবিবুল্লাহ চৌধুরী, প্রধান শাখার ম্যানেজার মো. এমদাদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের খুলনা শাখার শরিফুল ইসলাম, আনোয়ার পারভেজসহ বেশ কয়েকজন অফিস সহকারী রয়েছেন। এসব কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম নীতি মানা হয়নি বলেও তারা সারাবাংলার কাছে অভিযোগ করেছেন।

মাল্টি সিকিউরিটিজের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, এই করোনা সংকটের সময় কোনো ধরনের সার্ভিস বেনিফিট ছাড়া হঠাৎ করে আমাদের ছাঁটাই করায় আমাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে। তাই মানবিক কারনে হলেও আমাদের চাকরিতে বহাল রাখার দাবি করছি। আর তা সম্ভব না হলেও যেন সার্ভিস বেনিফিটটা আমাদের দেয়।

তবে মাল্টি সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জালাল ইকরামুল কবির সারাবাংলাকে বলেন, আমরা কাউকে ছাঁটাই করিনি। তবে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পারফর্ম করতে না পারায় নিজেরাই হতাশ হয়ে চাকরি ছেড়েছেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে করোনা সংকটের কারণে আমরা নিজেরাও আর্থিক সংকটে আছি। তারপরও যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী পদত্যাগ করেছেন, তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। আমরা হিসাব-নিকাশ করে তাদের প্রাপ্ত সার্ভিস বেনিফিট বুঝিয়ে দেবো।

 

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর