পলাতক মানবপাচারকারীদের ধরতে রেড অ্যালার্ট জারি করবে সিআইডি
৪ জুন ২০২০ ২২:০৯
ঢাকা: লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বিদেশে পলাতক মানবপাচারকারী চক্রকে ধরতে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) ইমতিয়াজ আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সিআইডি মানবপাচারকারী চক্রকে ধরতে তদন্তের পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করছে। প্রয়োজনে রেড নোটিশ জারির ব্যবস্থা করা হবে। মানবপাচারকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তে অনুসন্ধানের পর মানি লন্ডারিংয়ের মামলার প্রস্তুতিও রয়েছে সিআইডির।’
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ এ ক্ষেত্রে মানবপাচারকারীর রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। কাউকে কোনো ছাড়ও দেওয়া হবে না।’
গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানবপাচারের শিকার ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয় চক্রের সদস্যেদর স্বজনরা। এ ঘটনায় আহত হয় আরও ১১ বাংলাদেশি। অক্ষত রক্ষা পান আরও এক বাংলাদেশি।
এ ঘটনায় শুধু বাংলাদেশ নয়, আলোড়িত করেছে পুরো বিশ্বকে। এ ঘটনার নেপথ্যে জড়িতদের ধরতে অভিযানে নামে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বুধবার (৩ জুন) গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে সেন্টু শিকদার ও নার্গিস আক্তার নামে দুই মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৮)। লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় এর আগে গত ৩০ মে গ্রেফতার করা হয় চক্রের মুল হোতা হাজী কামালকে। এখন পর্যন্ত মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও সিআইডি।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে ৯টি। ওইসব মামলায় এখন বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার হলেও বেশিরভাগ মানবপাচারকারী পলাতক রয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশীয় মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ। কিন্তু এসব মানবপাচারকারী চক্রের অধিকাংশই রয়েছেন পলাতক অর্থাৎ দেশের বাইরে। তারা দেশের বাইরে থেকে এ দেশে দালালের মাধ্যমে মানবপাচারের মতো ঘৃণ্য কাজটি চালিয়ে আসছেন।’
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘পল্টনে সিআইডি থেকে দায়ের করা মামলার পাশাপাশি অন্যান্য মামলাও সিআইডি ছায়া তদন্ত করছে। তদন্তে মানবপাচারকারী হিসেবে যাদের তথ্য উপাত্ত ও নাম উঠে আসছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলার দ্রুত চার্জশিট আদালতে দাখিল করব। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে ওয়ারেন্ট জারির পর ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হবে।’
তিনি আরওে বলেন, ‘নিরীহ মানুষের জীবনের বিনিময় যে অর্থ-সম্পদ তারা করেছেন, এই সম্পদ তারা ভোগ করতে পারবেন না। তাদের বিরুদ্ধে আমরা মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করব। এরইমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে সিআইডি। বড় বড় যত সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী রয়েছে তাদের নাম আমরা সংগ্রহ ও ইনকোয়ারি শুরু করেছি।’