নিষেধাজ্ঞার পরও জোর করে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ টিএমএসএস’র বিরুদ্ধে
৬ জুন ২০২০ ২৩:২৮
ঠাকুরগাঁও: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে সবধরণের ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন সরকারের নির্দেশে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কিস্তি আদায় বন্ধের নির্দেশনা জারি করে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)। তবে সীমিত পরিসরে অফিস-আদালত খুলে দেওয়ার পর ঠাকুরগাঁওয়ে ঋণদানকারী সংস্থা (এনজিও) টিএমএসএসসহ জেলায় কর্মরত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে জোর করে ঋণে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৬ জুন) সকালে সদর উপজেলার নারগুন কহরপাড়া গ্রামের মন্দিরপাড়া বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে।
সূত্রমতে, সরকারের নির্দেশে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিও ঋণ শ্রেণিকরণ কার্যকর হবে না বলে নির্দেশনা রয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ)। একই সঙ্গে নির্ধারিত সময় শেষে কোনো জরিমানা ছাড়াই বকেয়া কিস্তি নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ে অধিকাংশ নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত এনজিওগুলো এই নির্দেশনা না মেনে কর্মকর্তা, মাঠকর্মীদের দিয়ে জোর করে কিস্তির টাকা আদায় করছে।
নারগুন কহরপাড়া মন্দীর বস্তিপাড়া গ্রামের মিনু রাণী বলেন, ‘আমি কিস্তির ১০০ টাকা কম দেওয়ায় আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে সমিতির লোকেরা আমানতের টাকা থেকে সমন্বয় করে নিয়েছে।’ একই অভিযোগ করেন রচনা রাণী, মেনকা, গীতা রাণীসহ অনেকে।
সালন্দর মাদরাসা পাড়া মহল্লার মুন্না বলেন, ‘আমার বাড়িতে এসে জোর করে কিস্তি আদায় করেছে টিএমএসএসের কর্মী। কিছু টাকা কম দেওয়ায় তারা আমাদের আমানতের টাকা থেকে কেটে নিয়েছে।’
শহরের শান্তিনগর মহলার ঋণগ্রহিতা আফরোজা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘করোনা থেকে বাঁচতে চরম আতঙ্কের মধ্যে একদিকে আমরা যেমন কর্মহীন হয়ে পড়েছি, তেমনি করোনা থেকে নিজেদের বাঁচাতে সরকারের নির্দেশে ঘরে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এরইমধ্যে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এনজিও’র মাঠকর্মীরা কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে।’
পৌর শহরের বাসিন্দা আহম্মেদ রাজু বলেন, ‘গত মে মাসে কিস্তি আদায়ের অভিযোগে প্রশাসন মোবাইল কোর্ট বসিসিয়ে টিএমএসএস জরিমানা করেছে। তারপরও তারা একই কাজ করে যাচ্ছে।’
তবে টিএমএসএসের এরিয়া ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার আমাদের কিস্ত আদায়ের অনুমতি দিয়েছে। সে মোতাবেক আমরা কিস্তি আদায় করছি।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিওগুলো কিস্তির টাকা আদায় করবে না বলে নির্দেশনা জারি করা হয়েছিলো। নির্ধারিত তারিখের আগেই মাঠপর্যায়ে কোন ঋণদানকারী সংস্থা কিস্তি আদায় কিংবা চাপ প্রয়োগ করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের জানাতে হবে। ওনারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’