করোনায় ভরসা বাইসাইকেল
৭ জুন ২০২০ ১০:২৬ | আপডেট: ৭ জুন ২০২০ ১৪:৫৭
ঢাকা: শাহাদাত হোসেন সুজন। একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। দুইমাস সাধারণ ছুটির পর তার অফিস খুলেছে। করোনা আতঙ্ক থাকলেও প্রতিদিনই অফিসে যেতে হয়। করোনা থেকে রক্ষায় অফিসে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলেও বিপত্তি ঘটে যাতায়াতে। ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন অফিসে যেতে হয়। এ অবস্থায় গণপরিবহন এড়াতে কষ্ট হলেও বাইসাইকেল কিনে নিয়েছেন তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে সুজনের মতো অনেকেই এখন গণপরিবহণ এড়াতে বিকল্প বাহন হিসেবে বাইসাইকেল ক্রয় করছেন।
পরিবেশবান্ধব বাহন হিসেবে বাইসাইকেল আগে থেকেই জনপ্রিয়। সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ এড়াতে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেলের মতো ব্যক্তিগত যানবাহন। এ কারণে সাইকেলের দোকানে ভিড় বাড়ছে। এই সুযোগে দামও বেড়েছে কয়েকগুণ।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ছুটির পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস খোলার পর প্রায় বন্ধ হতে চলা সাইকেল ব্যবসার পরিমাণ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাইকেলের মধ্যে সেলকন গ্লোরি, হিরো, বিএসএ এবং হারকিউলিস, টাটা, কসমিক সাইকেল বেশি বিক্রি হচ্ছে।
সাইকেল ক্রেতা শাহাদাত হোসেন সুজন বলেন, ‘অফিস খোলার পর সব থেকে বেশি আতঙ্কে ছিলাম যাতায়াতের বিষয় নিয়ে। রিকশা, সিএনজিতে ভাড়া অনেক বেশি। স্বাস্থ্য ঝুঁকি তো ছিলই। এরপর গণপরিবহন চালু হলেও ভাড়া অনেক বেশি। তাতে হিসাব করে দেখলাম। বেতন যা পাবো তা প্রায় যাতায়াতেই খরচ হয়ে যাবে। নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং খরচের বিষয়টি চিন্তা করে বাইসাইকেল কিনে নিলাম। এখন এটি দিয়েই প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করি। ভালোই লাগছে।’
বর্তমান পরিস্থিতি এবং পরিবেশের কথা চিন্তা করে হলেও শহরে বাই সাইকেলের যাতায়াতের জন্য সড়কে ব্যবস্থা থাকা উচিত বলেও মনে করেন সুজন। এতে ঢাকার বায়ু দূষণ অনেকটা কমে আসবে বলেও দাবি করেন তিনি।
ঢাকার বংশালের সাইকেল দোকানদার ইনতেখাব আহমেদ বাপ্পী সারাবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ ছিল। ৬৬ দিন পর দোকান খুলেছি। তুলনামুলকভাবে কিছুটা বিক্রি বেড়েছে। মানুষ সাইকেল কিনবে কীভাবে হাতে তো টাকা পয়সা নেই।’
গতকাল একজন ঘরের জিনিস বিক্রি করে সাইকেল কিনে নিয়ে গেছেন। তার ভাষ্য মতে করোনা থেকে বাঁচতে হলে গণপরিবহণ এড়িয়ে চলতে হবে। হাতে টাকা-পয়সাও তেমন নাই। কী আর করার ঘরের জিনিস বিক্রি করে ওই ক্রেতা সাইকেল কিনেছেন।
পরিবেশবান্ধব বাহন হিসেবে দিন দিন সাইকেলের চাহিদা বাড়ছে, আরও বাড়বে বলেও মনে করেন এই দোকানদার।