‘প্রত্যেক নাগরিকের জীবন পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ’
৭ জুন ২০২০ ২৩:২৬
ঢাকা: লিবিয়ায় গত ২৮ মে ২৬ বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যার বিষয়টি মর্মান্তিক বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের জীবন পুলিশের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই কেউ যেন কোনো নাগরিককে বিদেশে পাচার করে তার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। সেজন্য পুলিশের সব ইউনিটকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে।
লিবিয়া হত্যাকাণ্ডের পর গত ১ জুন বিকেলে বাংলাদেশ পুলিশের সকল ইউনিট প্রধানসহ পুলিশের সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন। রোববার (৭ জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) মো. সোহেল রানার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ভিডিও কনফারেন্সে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘যেভাবে আমাদের দেশের মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের দেশের মানুষকে এভাবে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে, সেই অবস্থানে এখন বাংলাদেশ নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্যাগী ও মোহনীয় নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদায় বলীয়ান এক অন্য বাংলাদেশ। অর্থ উপার্জন ও জীবিকার জন্য দুর্গম ও অবৈধ পথে বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমানোর কোনো কারণই নেই। এই বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের একটি উন্নয়নশীল দেশ। অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছি আমরা।’
পুলিশের মাঠ পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উদ্দেশে আইজিপি বলেন, যারা আমাদের দেশের নাগরিকদের প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে নিয়েছে, যাদের কারনে এই নির্মম মৃত্যু ঘটেছে তাদের একজনকেও ছাড় দেওয়া হবে না। তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে এই চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে আইনি প্রক্রিয়ায় কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে; যেনো ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশিকে এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে, তার জীবন নিয়ে খেলার দুঃসাহস কোনো মানুষ দেখাতে না পারে। দেশে ও বিদেশে যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন- এদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা এই ২৬ জনের পরিবারের স্বজনদের ভাই-বোন, পিতা-মাতা হারা করেছে তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বজনদের কান্নার দাগ শুকানোর আগেই, এই অপরাধী চক্রকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পর আমি দ্বিতীয়বার তোমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব, এর আগে নয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আইজিপির কঠোর নির্দেশে, তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব, ডিএমপি, সিআইডি, পিবিআইসহ বাংলাদেশ পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিট একযোগে অভিযানে নামে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে ৭ জুন পর্যন্ত মোট ২২টি মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের চিহ্নিত করে আইজিপির নির্দেশে গ্রেফতারে নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। এরই মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। সংশ্লিষ্ট অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ প্রত্যেক মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।