লাউয়াছড়ায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ
৮ জুন ২০২০ ১১:১০
মৌলভীবাজার: প্রতিনিয়ত প্রভাবশালী কর্তৃক বন উজাড়, লাউয়াছড়ার ভূমি দখল করে গড়ে ওঠা লেবু বাগান, বৃক্ষ পাচারের ফলে বন্যপ্রাণীদের মধ্যে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। তাই প্রায়শই খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে গিয়ে ধরা পড়ছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী।কখনো কখনো এসব বন্যপ্রাণী লোকালয় থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হলেও মানুষের হাতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
এই বন্যপ্রাণীদের তাদের নিজের নিরাপদ আবাসস্থল লাউয়াছড়া বনে নিরাপদে বেঁচে থাকতে হলে প্রয়োজন খাদ্য। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বন্যপ্রাণীর খাদ্যের যোগান দেয়া সেইসব গাছ এক শ্রেণীর চোর চক্র কর্তৃক পাচার হয়ে গেছে। লাউয়াছড়া চিরহরিৎ বন এখন পূর্বের জৌলস হারাচ্ছে তাই বন্যপ্রাণীর জীবনও হুমকির মুখে।
এসব বিষয় মাথায় রেখেই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন এক বিশেষ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। বন্যপ্রাণীদের খাবারের যোগান দেওয়া গাছগুলো সংগ্রহ করে ধারাবাহিকভাবে ১০ হাজার গাছ লাগানোর উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন সংগঠনটি।তারই ধারাবাহিকতায় রোববার (৭ জুন) সকালে গাছ লাগাই,পরিবেশ বাঁচাই এই স্লোগানকে সামনে রেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথম দিনের কার্যক্রম শুরু করে সংগঠনটি। প্রথম দিনেই বট, জলপাই, হরিতকী, বয়রা, কৃষ্ণচূড়া মিলিয়ে প্রায় ২শ’ গাছ রোপন করা হয় লাউয়াছড়ায়।
পর্যায়ক্রমে বাকি গাছগুলোও রোপণ করা হবে বলে জানান জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ। হৃদয় বলেন, গাছ আমাদের প্রাণ।যে অক্সিজেন নিয়ে প্রতিটি প্রাণ বেঁচে আছে তা সম্পূর্ণটাই আমরা গাছ থেকে পাই। এছাড়াও এসব গাছের ফল খেয়েই বেঁচে থাকে বন্যপ্রাণীরা। আমাদের প্রধান লক্ষই হলো বন্যপ্রাণীদের খাদ্য সংকট দূর করা আর একমাত্র সফলভাবে বৃক্ষরোপণ করতে পারলেই বন্যপ্রাণীদের জীবন নিরাপদ হবে।
ওই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃক্ষরোপন কাজের শুভ উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন।তিনি বলেন, বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু, বৃক্ষ ও বন্যপ্রাণীর জীবন নিরাপদ করতে না পারলে এ পৃথিবী একদিন বসবাসের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়বে। তাই নিজেরা নিরাপদে বাঁচতে হলে বন উজাড় নয় বরং বনায়নে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
বন্যপ্রাণী পাখি শিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে জানিয়ে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান বলেন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন টিম যেভাবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী রক্ষায়, আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি বিশ্বাস করি ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন’ সারাদেশে সুনাম অর্জন করবে। তিনি বলেন উচ্চশিক্ষিত যুবকদের নিয়ে গড়ে ওঠা এই সংগঠন দেশের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে এটা আমার বিশ্বাস ।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আফজাল আহমেদ সংগঠনের অন্যতম সদস্য পঙ্কজ নাগ, রূপক দত্ত, সুবাস দাশ তপন, মোহাম্মদ আলামিন,শাওন আহমেদ, মোহাম্মদ রিপন, সুজন মুন্ডা, কামাল হোসেন।