Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট ১৪ লাখ কোটি টাকার


৮ জুন ২০২০ ১৬:৫৮

ঢাকা: আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি (বিআইএ)। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় দেখানো হয়েছে ১২ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি রাখা হয়েছে। বাজেটের ঘাটতি মোকাবিলায় কোনো ধরনের বৈদেশিক সাহায্য না নিয়ে ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বন্ড ও কুপন বিক্রি করে ৭০ হাজার কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং পাবলিক প্রাইভেট পাটনারশিপ (পিপিপি) থেকে বাকি ২৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে।

সোমবার (৮ জুন) বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির এই বিকল্প বাজেট পেশ করা হয়। ‘করোনার মহাবিপর্যয় থেকে মুক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বাজেট উত্থাপন করেন সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত। এ সময় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবিত বাজেটে ১১টি মূল নীতি এবং বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়নে কথা উল্লেখ করে আবুল বারকাত বলেন, এটি বাস্তবধর্মী বাজেট। এই বাজেট কোনো কাল্পনিক প্রস্তাব নয়। এটা সম্পূর্ণ বাস্তবায়নযোগ্য একটি বাজেট। কেউ যদি প্রস্তাবিত বাজেটে কোনোন ঘাটতি রাখতে না চায়, তাহলে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা বাদ দেওয়া যেতে পারে। আগামী বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে শিক্ষা ও প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য খাত, সামাজিক সুরক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং পরিবহন খাতকে।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আহরণের জন্য নতুন ২১টি খাত প্রস্তাব করা হয়েছে। এই খাতগুলো থেকে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হবে। নতুন এসব খাতের মধ্যে রয়েছে সম্পদের ওপর কর আরোপ, অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর, কালো টাকার ওপর কর এবং বিদেশে টাকা পাচারকারীদের ওপর বাড়তি কর।

কোভিড-১৯ থেকে গরীর অসহায় মানুষকে রক্ষা করার জন্য মানুষ বাঁচাও প্রকল্পের আওতায় আগামী ছয় মাস খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। এছাড়া স্বাস্থ্য খাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আবুল বারকাত বলেন, করোনাভাইরাস দেশব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করেছে। এর প্রভাবে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির প্রথম ৬৬ দিনে (২৬ মার্চ থেকে ৩১ মে) ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। এতে করে দেশের জিডিপির ২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে ড. বারকাত বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যে সেবা খাতে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৬ কোটি, শিল্প খাতের ১ লাখ ২ হাজার ৪১ কোটি এবং কৃষি খাতে ২৬ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রত্যাশিত জিডিপির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ২৬ কোটি টাকা। তবে অর্জিত হয়েছে ৩৫ শতাংশ। করোনার কারণে সেবা খাতে ১ কোটি ৫৩ লাখ ও শিল্প খাতের ৯৩ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এছাড়া কৃষি খাতের ১ কোটি ১৪ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অন্যদিকে, উচ্চ মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে থেকে ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের আয় কমেছে, তারা দরিদ্র হয়ে গেছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে নিম্ন আয়ের ৪৭ শতাংশ মানুষের জন্য এককালীন ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দিতে হবে।

অর্থনীতি সমিতির সভাপতি বলেন, করোনার কারণে উচ্চ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত পর্যন্ত সবাই আরও একটু একটু করে নিচ তলায় নামলেও দেশের ১০ শতাংশ ধনী লোকের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। গত তিন মাসে দেশে দরিদ্রের সংখ্যা ২০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়ে ৪০ শতাংশে। তাই আগামী বাজেট হতে হবে কোভিড থেকে বেঁচে থাকার বাজেট। সমাজের বৈষম্যমুক্ত বাজেট। বাজেট হতে হবে গরীব মানুষের প্রবৃদ্ধির বাজেট।

এর আগে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ১২ লাখ ৪০ হাজার ৯০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। ওই বাজেটে যেখানে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছিল ১০ লাখ ২ হাজার ৫১০ কোটি টাকা।

১৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট অর্থনীতি সমিতি আবুল বারকাত টপ নিউজ প্রস্তাবিত বাজেট বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর