ঢাকা: কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরের বয়সসীমা বাড়াতে আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনটি অনুমোদন পেলে ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত কোনো ব্যক্তিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে। এর আগে এই বয়সসীমা ছিল ৬৫ বছর।
সোমবার (৮ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘দ্য বাংলাদেশ ব্যাংক (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২০’-এর খসড়াটিতে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে আদালতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখকে ‘জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস’ ঘোষণা ও দিবসটি উদযাপনের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ ও চীনের দুইটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে একটি জ্বালানি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব এবং কোম্পানি গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় স্মারকের খসড়াতেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ আইনের আর্টিকেল ১০ ক্লজ ৫-এর বিধান অনুযায়ী, গভর্নরের কার্যকাল বা মেয়াদ চার বছর এবং তাকে পুনঃনিয়োগ করা যাবে। তবে ওই ক্লজ অনুযায়ী ৬৫ বছর বয়স পেরিয়ে গেলে কোনো ব্যক্তি গভর্নর পদে আসীন থাকতে পারবেন না। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর পদে আর্থিক খাতে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৫ বছর নির্ধারিত থাকায় আর্থিক খাতে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে ৬৫ বছরের পর গর্ভনর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয় না। এমনকি গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিকেও ৬৫ বছরের পর পুনঃনিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয় না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আঞ্চলিক প্রতিবেশী দেশ ভারত বা শ্রীলংকাতেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা নেই। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সর্বোচ্চ বয়সসীমা সংক্রান্ত প্রভিশনটি বিলুপ্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পরে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই প্রভিশন তুলে দেওয়ার ফলে এখন কোনো ব্যক্তি ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকতে পারবেন।
আদালতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ক বিলে অনুমোদন
এদিকে, করোনা পরিস্থিতির কারণে মার্চ থেকে দেশের সব আদালত বন্ধ ছিল। কিন্তু জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রপতির জারি করা অধ্যাদেশ অনুযায়ী তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আদালতের কার্যক্রম চালু করা হয়। আদালতে এরকম প্রক্রিয়ায় বিচার কাজ অব্যাহত রাখতে হলে অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত করতে হবে। সে জন্য একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত বিল সংসদে উপস্থাপন করে অনুমোদন করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের মাধ্যমে সংসদে উপস্থাপনের জন্য ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ শীর্ষক আইনের খসড়া বিল প্রস্তুত করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই খসড়াতেও অনুমোদন দেওয়া হয়।