ক্ষতিগ্রস্ত কর্মজীবী নারীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার অনুরোধ ইন্দিরার
৯ জুন ২০২০ ১৭:৪০
ঢাকা: মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী নারীরা আর্থিক, সামাজিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। নারীরা চাকরি হারাচ্ছে ও উদ্যোক্তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে তাদের জীবন যাত্রার মান নেমে গেছে। অন্যদিকে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এ সংকটকালে জাতিসংঘের এজেন্সিসমূহ, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ও উন্নয়ন অংশীদারদের করোনাভাইরাস সংকটে ক্ষতিগ্রস্থ কর্মজীবী নারী, নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
মঙ্গলবার (৯ জুন) সচিবালয় থেকে ইউএন উইমেনের ব্যাংকক আঞ্চলিক অফিসের পরিচালক মোহাম্মাদ নাসিরির সঞ্চালনায় ‘টুওয়ার্ডস জেন্ডার রেস্পনসিভ কোভিড-১৯ রিকোভারি: এক্সপেরিয়েন্স ফ্রম এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক’ বিষয়ে ইউএন উইমেনের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সঙ্গে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের নয়টি দেশের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, ‘কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী যে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করেছে তা মোকাবিলায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে যে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছে তার ৭০ ভাগ নারী। বিশ্ব যখন মহাসংকটে তখন নারীরা ঘরে বসে নেই। বাংলাদেশেও স্বাস্থ্যখাতসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পেশায় উচ্চপদে নারীর দক্ষতা ও বলিষ্ট নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।’
‘করোনা সংকটে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আর্থিক সহায়তা, ঘরে বসে কাজ করা ও সরকারি-বেসরকারি সকল নাগরিক সুবিধা পাওয়ার বিষয় সুপারিশ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। একই সঙ্গে গবেষণা ও উন্নয়নের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে একসঙ্গে কাজ করে কোভিড-১৯ সংক্রামক ব্যাধিকে চিরতরে পৃথিবী থেকে দূর করতে হবে।’
বাংলাদেশে নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিকে গতিশীল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ লাখ কোটি টাকার বেশি ১৯টি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রফতানিমুখী শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার পূনঃঅর্থায়ন স্ক্রিম, ২ হাজার কোটি টাকার নতুন কর্মসৃজন যা থেকে নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা সুবিধা পাবে। এছাড়া প্রান্তিক আয়ের মানুষের জন্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ, ১২ শ কোটি টাকার নগদ অর্থ বিতরণ, গৃহ নির্মাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রণোদনা প্যাকেজ যার বেশিরভাগ উপকারভোগী নারী।’
সভায় জাতিসংঘের অ্যাসিন্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও ইউএন উইমেনের নির্বাহী পরিচালক আনিতা ভাটিয়া বলেন, ‘মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি নারী। নারী উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় নারীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিকল্প নেই। সভায় অংশ গ্রহণকারী মন্ত্রী ও প্রতিনিধিগণ তাদের দেশের নারী উন্নয়নের চিত্র ও কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।’