নিয়োগের দাবিতে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম ডিএমএফ ডিগ্রীধারীদের
১১ জুন ২০২০ ০০:২১
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: দীর্ঘ সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক ডিপ্লোমা ইন মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টি (ডিএমএফ) ডিগ্রীধারীদের বেকারত্ব বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে দেশে। এতে একদিকে যেমন তৃণমূলে মিলছে না পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা অন্যদিকে বেকারত্বের বোঝা নিয়ে দিনের পর দিন কর্মহীন ডিএমএফ ডিগ্রীধারীরা ভুগছেন জীবিকার অনিশ্চয়তায়।
তাই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতার সমাধান চেয়ে একাধিক বার স্বাস্থ্য অধিদফতরে নিয়োগের দাবি জানালেও মিলেনি কার্যকরী কোন উদ্যোগ। তাই এবার ডিএমএফধারী বেকাররা কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োদের দাবিতে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে।
বুধবার (১০ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিডিএমএ) এর কেন্দ্রীয় কমিটির নিয়োগ ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপকমিটি এবং উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাস্তবায়ন পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ আল্টিমেটাম দেয় সংগঠকরা। করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করেই এ মানববন্ধনে অংশ নেয় বেকার ডিএমএফ ডিগ্রীধারীরা।
মানববন্ধনে বেকার ডিএমএফ ডিগ্রীধারীরা দাবি করেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ থেকে ডিএমএফ ডিগ্রী সম্পন্ন এবং বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত বেকার ডিএমএফ’দের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে যেন অবিলম্বে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে শূন্যপদের বিপরীতে আপাদত চুক্তিভিত্তিক হলেও যেন তাদেরকে নিয়োগ দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
মানববন্ধনে বেকার ডিএমএফদের নিয়োগ নিয়ে বিডিএমএ এর নিয়োগ ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক ডাঃ আব্দুল কুদ্দুস তরফদার বলেন, জাতির পিতার হাতে জন্ম নেওয়া ডিএমএফ জাতির বর্তমানে ৩০ হাজারের অধিক বেকারকে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কারণ এই মহামারিতে আমরা দিনে ২৪ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ৭ দিনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
এ সময় উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাস্তবায়ন পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মুহাম্মাদ মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের এই করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে থেমে থাকা নিয়োগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যদি আগামী সাতকর্মদিবসের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেয়া না হয় তবে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেব। কেননা আমাদের নিয়োগের বিষয়টি অধিদপ্তরের প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও ১ মাস পরেও আমরা আশানুরূপ কোন ফল পাই নাই।
মানববন্ধনে সমন্বয় পরিষদের অন্যতম সমন্বয়ক নাছরুল্যাহ আনাছ বলেন, কোভিড-১৯ এর মহামারিতে আমরা ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধা হিসেবে করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। এ চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে সারাদেশে আজ পর্যন্ত ১৬৪ জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার করোনায় আক্রান্ত। এই মহামারিতে গ্রামের দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভেবে হলেও নীতিনির্ধারকদের উচিৎ দ্রুত আমাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা। কারণ করোনা ভাইরাস এর কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রোধ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিয়োগের বিকল্প নাই।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিডিএমএ কেন্দ্রীয় কমিটির কেন্দ্রীয় অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক (প্রচার) ডাঃ শোয়াইব আহমেদ, মোঃ কেফায়েত হোসেন, শামীম হোসেন আব্দুল্লাহ্, শুভ কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
সারাবাংলা/এসএইচ/জেএইচ