Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বড়’ ঘাটতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট


১১ জুন ২০২০ ১০:০৬

ঢাকা: ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর সম্ভাব্য আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে এর আকার ৪৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বেশি। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে এই বাজেট উত্থাপন করবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই বাজেটের ঘাটতির পরিমাণও বেশ বড়— ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ঘাটতি মোকাবিলাই হবে এই বাজেটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন – বরাদ্দ বাড়ছে বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে, সঞ্চালন-বিতরণে খরচ বেশি

সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটটি প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং বর্তমান উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতির সমন্বয়ে। এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। পাশাপাশি কৃষি খাত, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা এবং কর্মসংস্থানকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে নানা ধরনের কৃষি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা সম্প্রসারণ, ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যকে পুনরুদ্ধার করাসহ কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে বাজেটে বিভিন্ন প্রস্তাবনা থাকছে। বর্তমান অর্থমন্ত্রীর দ্বিতীয় এই বাজেটটি আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দ্বাদশ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০তম বাজেট।

বাজেটের আয়ব্যায়

২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে রাজস্ব বাবদ আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের কর বহির্ভূত রাজস্ব আয় ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং অনান্য খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা বৈদেশিক অনুদানসহ মোট আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে এক লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ছাড়া) ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা ছিল জিডিপির ৫ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন – কমছে না করপোরেট কর, বহাল থাকছে ব্যক্তি আয়কর সীমা

বাজেটের ঘাটতি পূরণ হবে যেভাবে

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে মোট ঘাটতি ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। ঘাটতি মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ৭৬ হাজার ৪ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। এছাড়াও সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ২০ হাজার কোটি ও অন্যান্য খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা।

আগামী বাজেটে এডিপি পরিমাণ

আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৭২২ কোটি টাকা। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতে ব্যয় করা হবে দুই হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন – ‘চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা কম হবে’

কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ

চলতি বাজেটে শিল্প ও ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান করের সঙ্গে ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুয়োগ রয়েছে। আবাসনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের সুযোগও চলমান রয়েছে। আগামী বাজেটে কালো টাকা বিনিয়োগের আরও বেশি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জরিমানা তুলে দেওয়ার পদক্ষেপও থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে কেবল ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আসতে পারে বাজেটে। পুঁজিবাজারসহ কয়েকটি খাতেও আগামী দুই বছরের জন্য সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

চিকিৎসাসামগ্রী আমদানি করমুক্ত থাকবে

আগামী বাজেটে করোনা সম্পর্কিত যাবতীয় চিকিৎসাসামগ্রী আমদানি করমুক্ত ঘোষণা করা হবে। বিশেষ করে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত থাকবে। এসব সামগ্রী উৎপাদনকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রণোদনা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন – ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে কৃষিখাতে আসছে নতুন ২০৫ প্রকল্প

চিকিৎসা কৃষিতে গুরুত্ব

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় চিকিৎসা ও কৃষি খাতে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য যেমন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিতে হবে, তেমনি করোনা পরবর্তী প্রভাব মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন ঠিক রাখতে হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। সরকারও এই দুই খাতে বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দ বাড়াতে পারে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন-

করোনা সংকট: কেমন বাজেট চান অর্থনীতিবিদরা?

অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট ১৪ লাখ কোটি টাকার

আগামী বাজেটে ‘কালো টাকা সাদা’ করার বিপক্ষে অর্থনীতিবিদরা

বাজেট ২০২০-২১: সামাজিক সুরক্ষা আওতায় আসছে ১ কোটি মানুষ

৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা অর্থবছর ২০২০-২১ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর