দুর্নীতি বন্ধ না হলে বাজেটের সুফল পাওয়া যাবে না: ন্যাপ
১১ জুন ২০২০ ২১:২৩
ঢাকা: সমাজ-রাষ্ট্রের রন্ধে রন্ধে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে বাজেটের সুফল পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর গণমাধ্যমে পাঠানো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ মন্তব্য করেন।
তারা বলেন, ‘করোনা সংকটের মধ্যে ঘোষিত জাতীয় বাজেটে গণমানুষের স্বার্থ রক্ষিত হয়েছে খুবই কম। তথাপি বাজেট বাস্তবায়নে সর্বস্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে বরাদ্দ করা অর্থ হরিলুট, দুর্নীতি, অপচয় রোধ করতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাবে না।’
ন্যাপের দুই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারিতে বর্তমানে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। ফলে তাদের ব্যয় এখন খুবই সীমিত। ফলে সরকারের রাজস্ব কমেছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কমানোর দাবি করা হলেও সরকার তা আমলে নেয়নি।’
তারা বলেন, ‘লুটপাটের ফলে ব্যাংকগুলোর অবস্থা এখন খুব খারাপ। এর মধ্যে সরকারকে এত বিপুল পরিমাণ লোন দেওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে। করোনার জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ বরাদ্দ যেন সঠিক খাতে, সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়, তার দিকে নজর রাখতে হবে। তা না হলে এই বরাদ্দ দুর্নীতিবাজ আর লুটেরাদের হাতে চলে যাবে। পাশাপাশি চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুনের স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কমানো, আমদানি করা চিনি ও রসুনের অগ্রিম আয়কর কমানো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমবে। ফলে এর সুফল ভোগ করতে পারবে জনগণ।’
তারা আরও বলেন, ‘শতভাগ রফতানিমুখী গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পকে প্রণোদনা দেওয়ার লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু পণ্য আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে পোশাক শিল্পের ওপর চাপ কমবে। এই সুবিধার কারণে মালিকরা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে বলে আশা করি। স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ খাত, শিক্ষাখাতের জন্য বরাদ্দ থেকে প্রতিয়মান হচ্ছে সরকার এই খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি এই খাতে দুর্নীতি বন্ধে সরকার কঠোর হবে এবং স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে। অন্যথায় এই বাজেট জনগণের কোনো কল্যাণে আসবে না।’
বাজেটে অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক নয় বলে উল্লেখ করে ন্যাপ নেতারা বলেন, ‘এর মাধ্যমে আসলে লুটেরা ও দুর্নীতিবাজদের স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে। ফলে দুর্নীতিবাজরা উৎসাহিত হয়। সরকারের উচিত এই প্রস্তাব বাতিল করা। সেইসঙ্গে কৃষিখাতকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। কৃষকদের বিনা সুদে অথবা নামমাত্র সুদে ঋণ দেওয়া উচিত। কারণ করোনাত্তোর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় রোধে অবশ্যই গ্রামীণ অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।’