ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২০-২১ সালের বাজেটকে বাস্তবমুখী বলে মনে করছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে সন্ধ্যায় বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। একই সঙ্গে উৎসে কর আরও কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ হারে আরও ৫ বছর অব্যাহত রাখার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতি বলা হয়, ’যখন সমগ্র বিশ্ব কোভিড-১৯ এর মহামারিতে টালমাটাল, জনজীবন পর্যন্ত বিপর্যস্ত, ঠিক সেরকম এক অভূতপূর্ব সংকটের মধ্যে থেকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিজের দ্বিতীয় এবং দেশের ৪৯তম বাজেট ঘোষণা করলেন। ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যত পথপরিক্রমা’ শীর্ষক বাজেটের লক্ষণীয় বিষয় হলো অর্থমন্ত্রী করোনার বাস্তবতার আলোকে গতানুগতিকতার বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এই সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, … শ্রমিকদেরকে সম্ভাব্য আর্থিক অভিঘাত থেকে সুরক্ষার জন্য ৫০০০ কোটি টাকার একটি মজুরি ঋণ সহায়তা প্যাকেজ প্রদান করেছেন, যার মাধ্যমে শিল্প একটি তাৎক্ষণিক বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হয়েছে। আশা করি, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা ও বৃহৎ শিল্পের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ সহায়তা প্যাকেজ দুটিও বাণিজ্যিক ব্যাংক সমুহের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে বিতরণ করা হবে। আমরা কৃতজ্ঞ যে, বাজেট প্রস্তাবনায় তৈরি পোশাক শিল্পখাতে রফতানির বিপরীতে যে নগদ সহায়তাগুালো চালু আছে সেগুলো অব্যাহত রাখার এবং পাশাপাশি অতিরিক্ত ১ শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তাও অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংগঠনটি বলছে, গতবছর পোশাক শিল্পের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উৎসে কর কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ হারে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছিলো। শিল্পের এই কঠিন সময়ে উৎসে কর দশমিক ২৫ শতাংশ হারে আরও ৫ বছর অব্যাহত রাখতে অর্থমন্ত্রীর প্রতি বিজিএমইএ বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছে। বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই বাজেট প্রস্তাবনায় আর্টিফিশিয়াল ফাইবার উৎপাদনকে কর হ্রাসের জন্য। যদিও রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের চাহিদার কারণে গত কয়েক দশকে আমাদের পশ্চাদসংযোগ শিল্পখাতটি উল্লেখযোগ্যভাবে বিকশিত হয়েছে, তথাপি প্রাথমিক বস্ত্রখাত উৎপাদনের ক্ষেত্রে ম্যানমেড ফাইবার, পলিয়েস্টার, ভেজিটেবল ফাইবার ও অ্যানিম্যাল ফাইবার উৎপাদনে না যেয়ে কটন ফাইবার (প্রাকৃতিক তন্তু) উৎপাদনের মধ্যেই সীমাবন্ধ থেকেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পখাতে কর্পোরেট করহার গ্রীন কারখানার জন্য ১০ শতাংশ এবং গ্রীন কারখানা ব্যতিত অন্যান্য কারখানার জন্য ১২ শতাংশ হারে বিদ্যমান রয়েছে। বাজেট প্রস্তাবনায় এই হার আগামী দু বছরের জন্য অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণা প্রদানের জন্য শিল্পের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আরও বলা হয়, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে স্থানীয় পর্যায়ে সংগৃহীত পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রদান ও রিটার্ন দাখিল হতে অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাবটি সুবিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে বর্তমানে নগদ সহায়তার বিপরীতে যে ৫ শতাংশ আয়কর কর্তনের বিধান রয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি।