মোবাইল সেবায় সম্পূরক শুল্ক গ্রাহকের ওপর চাপ বাড়াবে
১২ জুন ২০২০ ০২:২০
ঢাকা: সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে গ্রাহকদের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরদের। সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী অ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন। পরে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগটন অ্যামটব ও বিভিন্ন অপারেটরের কাছ থেকে এমন মন্তব্য এসেছে।
আরও পড়ুন- মোবাইল কলে খরচ বাড়ছে, ১০০ টাকায় সরকার নেবে বাড়তি ৩
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, সরকার নিয়মিতভাবে প্রতিবছর এই খাতের ওপর আরও বেশি করে করের বোঝা চাপিয়ে একে আরও দুর্বল করে তুলছে। গ্রাহকদের ওপর ফেলছে বাড়তি চাপ। ফলে দেশের জিডিপিতে মোবাইলের বর্তমান অবদান ৭ শতাংশ থেকে যে দুই অঙ্কের ঘরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা আর অর্জিত না-ও হতে পারে।
তিনি বলেন, এ বছর সরকার মোবাইলের মাধ্যমে প্রাপ্ত সব রকম সেবার ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। এর ফলে গ্রাহকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। এ বিষয়ে এসআরও জারি হওয়ায় তা আজ দিবাগত রাত ১২টার পর থেকেই কার্যকর হবে। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এমনিতেই মানুষদের মধ্যে যখন নাভিশ্বাস উঠেছে, মোবাইল মাধ্যম হয়ে উঠেছে সব যোগাযোগের মূল চালিকা, দেশ যখন ডিজিটাল ইকনোমির দিকে এগিয়ে চলছে; ঠিক সে সময় এ ধরনের করের বোঝা কোনোভাবেই দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
মোবাইল খাতের পক্ষ থেকে অলাভজনক কোম্পানির জন্য বর্তমান ২ শতাংশ ন্যূনতম কর বিলোপ ও করপোরেট ট্যাক্স কমানোর জন্য অনুরোধ করলেও তা বিবেচনায় না করাকে চরম হতাশাজনক বলে অভিহিত করেন এস এম ফরহাদ। সরকারকে টেলিকম খাতের বাজেটের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের হেড অব পাবলিক অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, ২০২০-২১ সালের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় কোভিড-১৯ ও পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় মোবাইল সেবা ব্যবহারে গ্রাহকদের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ডিজিটাল বাংলাদেশের সম্ভাবনার পথে অন্তরায়। গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছি।
তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বাংলালিংকের সিইও এরিক অস বলেন, আমাদের গ্রাহকরা এরই মধ্যে উচ্চ করের বোঝা বহন করে টেলিকম সেবা গ্রহণ করছেন। এ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে তা অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের প্রভাবিত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে পড়বে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর করোনা মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাবের কথা বিবেচনা করে সরকারের কাছে আমরা ইন্টারনেটের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারেরও দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া যেহেতু আমরা ব্যবসায়িকভাবে এখনো লাভজনক অবস্থানে যেতে পারিনি, সেহেতু আমরা সরকারকে অনুরোধ করব, আমাদের আয়ের ওপর ন্যূনতম করের হার যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়।
অ্যামটব গ্রামীণফোন বাংলালিংক মোবাইল মোবাইলে বাড়তি কর সম্পূরক শুল্ক